বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ একের পর এক দুর্নীতিতে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। এইসব দুর্নীতিতে নাম জড়াচ্ছে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম। কিছুদিন আগেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছে। এবার গতকালই গরু পাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মাঝে এবার জাতীয় রাজনীতিতে বড় ধাক্কা খেল তৃণমূল কংগ্রেস। দল ছাড়লেন প্রাক্তন জেডিইউ নেতা পবন বর্মা।
একদিকে বিহারের পালাবদল এবং অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের একের পর এক দুর্নীতিতে নাজেহাল পরিস্থিতির মধ্যেই মমতার সঙ্গ ছাড়তে চাইলেন পবন বর্মা। গত বছর নভেম্বরেই এই প্রাক্তন সাংসদ জেডিইউ ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ৯ মাস কাটার আগেই তৃণমূল ছাড়লেন। ইতিমধ্যেই তিনি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফা পাঠিয়েছেন। এই সংক্রান্ত একটি টুইটও করেছেন তিনি।
গত বছরই ২৩ নভেম্বর দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন পবন বর্মা। তাঁকে গলায় উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন মমতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে বসিয়েছিলেন। সেই সময় দলে যোগ দিয়েই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের প্রাক্তন উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে থাকবেন।’
এদিকে, দল ছাড়ার কথা জানিয়ে পবন বর্মা যে টুইট করেছেন, তাতে কোনও সুনির্দিষ্ট কারণের উল্লেখ করেননি তিনি। এদিন সকালেই টুইট করে পবন বর্মা জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর ইস্তফাপত্র যেন দল গ্রহণ করে সেই আবেদনও তিনি করেছেন। পবন বর্মার দল ত্যাগকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। এদিকে, বর্ষীয়ান এই নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, সাম্প্রতিককালে একের পর এক যে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের নেতা- মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে, সেই কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।
প্রসঙ্গত তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে পবন বর্মা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উপদেষ্টা ছিলেন। পবন বর্মা একজন দক্ষ কূটনীতিবিদ। ভুটানে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন এক সময়ে। পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। প্রথমে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উপদেষ্টার পদে ছিলেন তিনি, পরে জেডিইউয়ের টিকিটেই রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছিলেন। নীতীশ কুমারও যথেষ্ট ভরসা করতেন এই দুঁদে কূটনীতিকের উপর। এককালে জনতা দল ইউনাইটেডের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও সামলেছেন পবন বর্মা। দেশের প্রাক্তন এই ফরেন সার্ভিস অফিসার ২০২০ সালে জেডিইউ-এর সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন তিনি। এরপর তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গও ছাড়লেন।
আপনার মতামত লিখুন :