বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কংগ্রেসের সভাপতি পদে থাকবেন না গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য। এমনটাই চান রাহুল গান্ধী। শুক্রবার এমনটাই জানালেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সাংসদ রাহুল গান্ধীর ইচ্ছাতেই এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গেহলট। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হচ্ছে। যদিও কবে মনোনয়ন পেশ করবেন, সে বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, অশোক গেহলটের পাশাপাশি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে লড়াইয়ের দৌড়ে আরও কয়েকজনের নাম শোনা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এর মধ্যে শশী থারুর, দিগ্বিজয় সিং, মণীশ তিওয়ারি প্রমুখের নাম। যদিও এখনও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। এদিনই প্রথম গেহলটই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা করলেন।
উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধীকে সভাপতি পদে চেয়ে সাতটি প্রদেশ কমিটি প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। এর মধ্যে অন্যতম গেহলটের রাজ্য রাজস্থান। কিন্তু রাহুলের মতো পরিবর্তনের কোনও ইঙ্গিত মিলেছিল না। তার উপর আজকের পর এটা কার্যত স্পষ্ট যে, সভাপতি পদের জন্য লড়াই হতে চলেছে অ-গান্ধীদের মধ্যেই। শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অশোক গেহলট বলেন যে, ‘রাহুল গান্ধী চান, কংগ্রেসের সভাপতি পদে যেন গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য না থাকেন। এই পদের দায়িত্ব নিতে আমি তাঁকে অনেকবার বুঝিয়েছিলাম। কংগ্রেসের অধিকাংশ কর্মীই এটা চান। কিন্তু সেই কথা মানতে রাজি হননি রাহুল।’
এর পাশাপাশি গেহলট আরও জানিয়েছেন যে, ‘রাহুলজি আমাকে বলেছেন, তিনি জানেন যে সকলে তাঁকেই কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে চায়। কিন্তু বিশেষ একটি কারণে তিনি চান না গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য কংগ্রেসের সভাপতি পদে থাকুন।’
প্রসঙ্গত কংগ্রেসের সভাপতি পদে উঠে এসেছে দুটি নাম এক অশোক গেহলট এবং শশী থারুর। থারুর ইতিমধ্যেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করেছেন। তবে, এখনও পর্যন্ত প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি কোনও ঘোষণা করেননি। আজ গেহলটের ঘোষণার পর রাজনৈতিক বিশেসজ্ঞরা মনে করছেন যে, তিনিই কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে দল শচীন পাইলটকে রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই রাহুল গান্ধী রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলটের সরাসরি নাম না নিয়ে, তাঁকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তাঁর বার্তা-দলের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ একই সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী- এই দ্বৈত ভুমিকায় থাকতে পারবেন না গেহলট। বৃহস্পতিবার কেরলে এক সাংবাদিক বৈঠক করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমরা উদয়পুরে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি আশা করি তা বজায় থাকবে।’
এদিকে, রাজস্থানের পঞ্চায়েতি রাজ এবং গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রাজেন্দ্র গুড়া ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যদি মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট দলের জাতীয় সভাপতি হন এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন, আর তাঁর জায়গায় যদি শচীন পাইলট মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন এবং তাঁকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি এবং অন্য পাঁচজন বিধায়ক তার বিরোধিতা করবেন না। রাজেন্দ্র গুড়া বলেন, ‘আমাদের কংগ্রেসের নেতারা সোনিয়াজি, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা তাঁরা সবাই মেনে নেবেন।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, নির্বাচনে যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক না কেন, তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন। আগামী ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কংগ্রেসের সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের শীর্ষপদে কে বসবেন, তা জানা যাবে ১৯ অক্টোবর। তবে গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে সভাপতি হলেও, দল পরিচালনার রাশ থাকবে সোনিয়া-রাহুলের হাতেই, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন :