বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গতকালই বড় চমক দিয়ে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। মঙ্গলবার বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যশবন্ত সিনহার নাম ঘোষণার পরই বিজেপিও তাঁদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। দৌপদী মুর্মুকে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছ বিজেপি। দৌপদী মুর্মু হলেন বিজেপির সমর্থিত জোটের রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী।
মঙ্গলবার এই ঘোষণার সময় সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, ‘যে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা সঠিকভাবে পালন করেছেন। সেকারণেই দৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছ বিজেপি সংসদীয় বোর্ড।’ গতকাল
দৌপদী মুর্মুর নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পরই তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে তিনি জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাবেন। সামনেই রয়েছে তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেই কারণেই ঝাড়খণ্ডের এই প্রাক্তন রাজ্যপাল ভগবানের আরাধনা করে শুরু করলেন রাজনৈতিক জীবনের নতুন যাত্রা। তবে, শুধু পুজো দেওয়াই নয়। ঝাঁটা হাতে মন্দির চত্বর সাফাই করতেও দেখা গেল বিজেপির রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে।
তিনি আগামী দিনে দেশের রাষ্ট্রপতি হবে কিনা সেই উত্তর যথা সময়েই মিলবে। কিন্তু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পরও তিনি আগের মতোই মাটির সঙ্গেই জুড়ে রয়েছেন। সেক্তহাই আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বুধবার সকালেই যান ময়ূরভঞ্জের রায়রাংপুরের জগন্নাথ মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে যান শিব মন্দিরে। সেখান পৌঁছেই ঝাঁটা হাতে তুলে নেন, এবং মন্দির চত্বর পরিষ্কার করেন। একেবারে বাড়ির মেয়ের মতোই ছিল তাঁর আচরণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আর মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল। নেটিজেনদের ভূয়সী প্রশংসাও কুড়িয়েছেন আদিবাসী নেত্রী দৌপদী মুর্মুর সারল্য।
যখন তাঁর নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা কড়া হয়েছিল। তখন তা বিশ্বাসই করতে পারেননি প্রথমে। তিনি বলেন, ‘সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছি। বিশ্বাসই করতে পারছি না এমনটা হয়েছে। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। পদে এলে সংবিধান মেনেই নিজের দায়িত্ব পালন করব।’
দৌপদী মুর্মু হলেন বিজেপির সমর্থিত জোটের রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী। ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম বিরাঞ্চি নারায়ণ টুডু। দৌপদী মুর্মুর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল একজন শিক্ষিকা হিসেবে। রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। রায়রাংপুরের জেলা বোর্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। দ্রৌপদী মুর্মু ওডিশার প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন এবং ২০০০ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত রায়রাংপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।
২০০০ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিজেপি এবং বিজেডি’র জোট সরকার থাকাকালীন মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর দায়িত্বে ছিল পরিবহণ, পশুপালন এবং মৎস্য দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। দৌপদী মুর্মু ঝাড়খণ্ডের নবম রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনিই ঝাড়খণ্ডের প্রথম রাজ্যপাল, যিনি রাজ্যপালের পাঁচ বছরের কার্যকালের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, দৌপদী মুর্মু যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হন তাহলে সেক্ষেত্রে তিনিই হবেন দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। এদিকে, হিসেব বলছে, ১৮ টি বিরোধী দলের সমর্থিত প্রার্থী যশবন্ত সিনহার থেকে কিছুটা রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন দৌপদী মুর্মু।
আপনার মতামত লিখুন :