বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে বিতর্ক জেন থামতেই চাইছে না। এরই মধ্যেই এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে অশান্তি ঠেকাতে আগামী ৩ দিন কর্ণাটকের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে একটি টুইট করেন। সেই টুইটের মাধ্যমে তিনি এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি টুইট করে লিখেছেন, ‘আমি সমস্ত ছাত্র, শিক্ষক এবং স্কুলও কলেজের ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি কর্ণাটকের জনগণকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করছি। আমি আগামী তিন দিনের জন্য সমস্ত হাইস্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সকলকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এর আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার মুখোমুখি হয়ে বলেন যে, ‘আমরা কর্ণাটক হাইকোর্টের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। স্কুল প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনও সংঘাত না হয়। উস্কানিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য বাইরে থেকে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’
এদিকে, বিরোধী শিবির কংগ্রেসও কর্ণাটকে আইনশৃঙ্খলা আবার ফিরিয়ে আনার জন্য সে রাজ্যের সরকারকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে। কর্ণাটকের কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার জানিয়েছেন, ‘কর্ণাটকের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি এতোটাই হাতের বাইরে চলে গেছে যে, একটি ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকার পরিবর্তে জাফরান পতাকা নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলো এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা উচিত। অনলাইনে পড়াশোনা চলতে পারে।’
উল্লেখ্য, এদিন কর্ণাটক হাইকোর্টে হিজাব সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হয়েছে। উদুপির সরকারি কলেজের ৫ মহিলার করা আবেদনের শুনানি। রয়েছে আগামীকাল দুপুর ২.৩০ নাগাদ। এদিকে, হাইকোর্ট ছাত্র এবং জনসাধারণকে শান্তি রাখতে বলেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই হিজাব বিতর্কের সূত্রপাত হয় এক মাস আগে। উদুপির একটি গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে কয়েকজন হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুমে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেই জেলার পরপর চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এনিয়ে শোরগোল পড়ে যায় চারদিকে। এদিকে কিছু পড়ুয়া আবার গেরুয়া পোশাক পরে কলেজে আসে। এরপরই বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তার পরেও এই বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা কমেনি।
উদুপির ঘটনার পর কর্ণাটকের বিজয়পুর, চিক্কাবল্লপুর, চিক্কামাগালুরু এবং হাভেরি এলাকার বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই হিজাব পরে আসেন। কেউ কেউ আবার আসেন গেরুয়া পোশাক পরে। এমনিতেই করোনার জেরে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ ছিল। তার মধ্যে এই বিতর্কে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি তার স্বাভাবিক চেহারা হারায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত অধ্যাপক, কলেজগুলির কর্তা এবং অভিভাবকরাও।
আপনার মতামত লিখুন :