বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেখতে দেখতে ২৩ টা বছর অতিক্রম করল। আজ থেকে দীর্ঘ ২৩ বছর আগে, ভারতের বীর যোদ্ধারা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে, কার্গিলের পাহাড়ে বিজয়ের কাহিনি লেখেন। ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানি সৈন্যদের ইচ্ছেকে দুরমুশ করে কার্গিলে দেশের তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেন। সেই দিনটি ছিল ২৬ জুলাই। ২৬ জুলাই ভারতকে গর্বিত করেছিলেন দেশের বীর সেনারা। আজ সেই ২৬ জুলাই, গর্বের দিন। এই দিনটিকে দেশে কার্গিল বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯৯ সালের আজকের দিনেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করেছিল। তাই ২৬ জুলাইকে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত করে, প্রতিবছর কার্গিল বিজয় দিবস পালিত হয় দেশব্যাপী।
১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাসে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়। পাকিস্তানি সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করলে, যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। কার্গিলের উঁচু দুর্গম পাহাড়ে অনুপ্রবেশ করে ঘাঁটি তৈরি করে পাকিস্তানি সেনার দল। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই বিষয়ে অবগত ছিল না। কিন্তু যখন ভারতীয় সৈন্যরা জানতে পারেন, সেই মুহূর্তে তাঁরা পাকিস্তানি সৈন্যদের সেখান থেকে উৎখাত করতে তৎপর হন।
দু-মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর, ১৯৯৯ সালে ২৬ জুলাই ফের একবার কার্গিল ওড়ে ভারতীয় পতাকা। ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানি সৈন্যদের দখল করা পাহাড়ি পোস্টগুলি পুনরুদ্ধার করে। বহু সেনা শহিদ হন। কার্গিল বিজয় দিবস ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা ভারতীয় বীরদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে দেশে কার্গিল বিজয় দিবস পালিত হয় প্রতি বছর।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের পর থেকে সিয়াচেন হিমবাহের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বেশ কয়েকবার লড়াই হয়েছে। ১৯৯৯ সালের ৩ মে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী কাশ্মীর এবং লাদাখের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় পার করে। এই ভাবেই তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করে পাহাড়ি পোস্ট দখল করেছিল। ভারত সেই পোস্ট পুনর্দখল করতে ‘অপারেশন বিজয়’ দিয়ে পাল্টা জবাব দেয়।
ভারতীয় সৈন্যরা ধাপে ধাপে এগিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের পর্যুদস্ত করেছিল। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ২ মাস ধরে মোট তিনটি পর্যায়ে এই যুদ্ধ হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে, পাকিস্তানি বাহিনী টাইগার হিল এবং অন্যান্য পোস্টে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করে ভারতীয় ভূখণ্ডে আক্রমণ করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, ভারতীয় সেনাবাহিনী পরিবহন রুট দখল করে এবং জবাব দিতে শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনিকে। আর কার্গিল যুদ্ধের তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাহায্যে পাকিস্তানি সেনাদের সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সাফল্য অর্জন করে।
আপনার মতামত লিখুন :