বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীকে তলব করেছিল ইডি। এদিকে, রাহুল গান্ধীর ইডি’র দফতরে হাজিরা দেওয়ার আগেই উত্তেজনা ছড়ায় রাজধানীতে। আজ সকালেই উক্ত মামলায় ইডি’র দফতরে হাজিরা দেন রাহুল গান্ধী। দীর্ঘক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি রাজধানী দিল্লিতে। দিল্লি পুলিশের হাতে নিগ্রহের শিকার হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাঁ দিকের পাঁজরে চির ধরা পড়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় এদিন সকালেই দিল্লিতে ইডি’র দফতরে হাজিরা দেন রাহুল গান্ধী। তাঁকে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি’র তদন্তকারীরা। এদিকে, চুপ করে বসেছিলেন না কংগ্রেসে নেতা- কর্মীরা। এদিন সকাল থেকেই রাহুল গান্ধীর বাড়ির বাইরে ভিড় করতে শুরু করেন কংগ্রেস সমর্থকরা। গতকালই নানা কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে। এদিন রাহুল গান্ধীর প্রতি সমর্থন দেখাতেই তাঁর বাড়ির বাইরে সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন কংগ্রেস সমর্থকেরা। এরপর মিছিল শুরু করার প্রস্তুতি নিতেই আটক করা হয় কংগ্রেস সমর্থকদের। জোর করে কংগ্রেস সমর্থকদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তজেনা ছড়ায়।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচির ঘোষণা করা হলেও, রবিবারই রবিবারই দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, বর্তমান সাম্প্রদায়িক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই, কোনভাবেই কোনওরকম মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। আবার উল্টোদিকে, কংগ্রেস নেতাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, তাঁরা দিল্লি পুলিশের কাছে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানাবেন। কিন্তু পরে সেই অনুরোধ জানানো হলেও, মিছিল করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখা হয়নি যথারীতি। সেক্ষেত্রে মিছিল করার ব্যাপারে আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়। এদিন সকালেই কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছিল যে, দলের কোনও কর্মসূচী বাতিল হয়নি। গোটা দেশব্যাপী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, ধর্না এবং মিছিল করা হবে। সকাল থেকেই রাহুল গান্ধীর বাড়ির বাইরে ভিড় করতে শুরু করেন কংগ্রেস সমর্থকেরা। তবে, সেখানে আগেই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল জমায়েতের আশঙ্কা করেই। এরপর সমর্থকেরা রাহুল গান্ধীর নামে স্লোগান দিতে শুরু করলে এবং মিছিল শুরু করার চেষ্টা করলেই, তাঁদের প্রত্যেককে আটক করা হয়।
এদিকে, আজ সকালে ইডি’র দফতরে হাজির হন অধীর চৌধুরী, পি চিদারম্বম, অশোক গেহলট-সহ অসংখ্য কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁরা সব পুলিশি ব্যারিকেড ভাঙতে শুরু করেন। একসময় তো রাস্তায় বসে পড়েন অধীর চৌধুরী। হাত শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বিক্ষোভ থামাতে চিদম্বরম-সহ দলের অন্যান্য নেতাদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়।
এরপর রাতেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী টুইট করেন, ‘ভাগ্য ভালো, তিন পুলিশ কর্মী ধাক্কা দেওয়ার পরও শুধুমাত্র পাঁজরে চিড় ধরেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ১০ দিনে সেরে যাবে। আমি ভালো আছি। কাল থেকে কাজ যোগ দেব।’ এদিকে, আজ তিন ঘণ্টা জেরার পর ইডির দফতর থেকে বেরোন রাহুল গান্ধী। দুপুরে বাড়িতে গিয়ে খাওয়াদাওয়াও করেন।
হাত শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করেই কেন্দ্রীয় সরকার রাহুল গান্ধীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধীর সমর্থনে গোটা দিল্লি জুড়ে ‘আই অ্যাম রাহুল গান্ধী’ এবং ‘ডিয়ার মোদী অ্যান্ড শাহ, রাহুল গান্ধী আপনাদের সামনে মাথা নোয়াবে না’- ইত্যাদি নানা পোস্টার দেখা গিয়েছে। এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস সমর্থকেরা আকবর রোডের কংগ্রেসের সদর দফতরে এবং ইডির দফতরের সামনে জড়ো হন। এদিকে, ইডি’র দফতরের সামনেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা হয় এদিন।
আপনার মতামত লিখুন :