বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের নয়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। এদিকে, তাঁকে নিয়েই লিঙ্গবৈষম্য মূলক মন্তব্য করার অভিযোগে বিতর্কে জড়িয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আবার এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সংসদে বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সঙ্গে বচসায় জড়ালেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। প্রকাশ্যেই স্মৃতি ইরানির উদ্দেশে সোনিয়া গান্ধীকে বলতে শোনা গেল যে, ‘আমার সঙ্গে কথা বলবেন না’!
বুধবার সোনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জেরার কারণে প্রতিবাদস্বরূপ ধরনায় বসেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী-সহ কংগ্রেস সাংসদরা। ঠিক সেই সময়ই এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে অধীর দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি সম্বোধন না করে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে বসেন। এরপরই সমস্যার সূত্রপাত। ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই আক্রমণ করে বিজেপি। ময়দানে নামেন স্মৃতি ইরানি।
এদিন সংসদ অধিবেশন শুরু হতেই শাসকদলের সাংসদরা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি তোলেন। লোকসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি অধীরের বক্তব্য নিয়ে সোনিয়া গান্ধীকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, ‘সোনিয়া গান্ধী দেশের সর্বোচ্চ আইনসভায় একজন মহিলাকে এভাবে অপমানিত হতে দিলেন। তিনি আদিবাসী বিরোধী, দলিত বিরোধী এবং নারী বিদ্বেষী।’ এখানেই শেষ নয়, স্মৃতি ইরানি অধীরের পাশাপাশি সোনিয়া গান্ধীকে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি জানান।
এই দাবি শোনার পরই ক্ষুব্ধ সোনিয়া গান্ধী বিজেপি সাংসদ রমা দেবীর সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। সোনিয়া প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তাঁর নাম বিতর্কে টেনে আনা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি এও বোঝাতে চান যে, অধীর চৌধুরী মন্তব্যটি মুখ ফসকে করেছেন। তার জিন্য ইতিমধ্যেই তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কিনতি কংগ্রেস সভানেত্রীকে ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে হাঁটতে দেখে স্মৃতি ইরানি বাঁধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বের। সেই সময় সোনিয়া গান্ধীকে একাধিক বিজেপি সাংসদ ঘিরে ধরে ‘ক্ষমা চাও’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বলেও অভিযোগ।
সূত্রের খবর, এরপরই স্মৃতি ইরানি সোনিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ম্যাডাম আমি কি আপনাকে সাহায্য করতে পারি? আমিই আপনার নাম নিয়েছিলাম।’ তাঁর কথা শুনেই ক্ষোভ প্রকাশ করে, সোজা স্মৃতির দিকে তাকিয়ে সোনিয়া বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলবেন না।’ এও বলেন যে, ‘আপনি কীভাবে আমার সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারেন?’
এদিকে, স্মৃতির এদিনের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। এদিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করে লেখা হয় যে, ‘স্মৃতি ইরানির সোনিয়ার প্রতি নির্লজ্জ আচরণ রাজনীতির নতুন অবনমনের চিহ্ন। তিনি কেবল এই কক্ষের মহিলাদেরই অসম্মান করলেন না। দেশের সমস্ত মহিলাকেই অপমান করলেন। কিন্তু আমরা গোয়ার বেআইনি বার কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই থাকব। স্মৃতি ইরানি লজ্জা করুন।’
অন্যদিকে, ‘রাষ্ট্রপত্নী’ শব্দ নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘এই একটা শব্দের জন্য় কি আমায় ফাঁসি দেওয়া হবে? তবে তাই করুন, ফাঁসি দিন আমায়। কার কাছে ক্ষমা চাইবো আমি? বিজেপির কাছে? কে বিজেপি? আমি গতকালও বলেছি যে মুখ ফসকে এই শব্দ বলেছি আমি।’ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, তাঁকে যেন একবার স্বপক্ষে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।’
আপনার মতামত লিখুন :