বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গুলি করে হত্যা করা হয়েছে জনপ্রিয় পাঞ্জাবী গায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সিধু মুসেওয়ালাকে। রবিবার সন্ধের সময় তিনজনকে লক্ষ্য করে গুলি করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। তিনজনের মধ্যেই ছিলেন সিধু। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা পাঞ্জাবী গায়ককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলেই সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, শনিবারী সিধু মুসেওয়ালা-সহ ৪২৪ জন ভিআইপি’র নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টির সরকার। আর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পরের দিনই ঘটে বড় অঘটন। পাঞ্জাবের মানসা এলাকার জাওহারকে গ্রামে সন্ধের সময় সিধু-সহ তিনজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। সিধু মৃত্যু হয় এবং বাকি দুইজন এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আগের দিন সিধুর নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরের দিনই তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। এদিকে, ইতিমধ্যেই সিধুকে হত্যার দায় স্বীকার করে নিয়েছে কানাডার গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার। ওই গ্যাংস্টার নিজেই স্বীকার করে জানিয়েছে যে, পঞ্জাবে তার ঘনিষ্ঠরাই সিধু মুসেওয়ালাকে গুলি করে মেরেছে।
অন্যদিকে, পুলিশের হাতেও একটি সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, গুলি চালানোর ঠিক আগেই দুটি গাড়ি সিধুর কালো রঙয়ের গাড়িটিকে রীতিমতো পিছু নিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে ওই গাড়িটিতেই ছিল দুষ্কৃতীরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সিধুর নিজের একটি বুলেট প্রুফ গাড়িও ছিল। শনিবার নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হলেও, বুলেট প্রুফ গাড়িটি তার নিজস্বই ছিল। তাহলে রবিবার কেন তিনি ওই গাড়ি নিয়ে বের হননি, সেই প্রশ্নই উঠছে। বুলেট প্রুফ গাড়ির বদলে রবিবার সিধু কালো রঙের এসইউভি গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলেন। সিধুর গাড়ি বাঁক নিতেই অন্য দুটি গাড়ি তাঁর গাড়িকে ধাওয়া করে।
রবিবার পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে ৪ টে নাগাদ সিধু বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, তার এক ঘণ্টা বাদেই আততায়ীরা হামলা করে। জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ৩০ টি গুলি চালান হয়েছিল সিধুর উপরে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাঞ্জাবের জনপ্রিয় গায়ক সিধু মুসেওয়ালা। চলতি বছরে পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কংগ্রেসে যোগ দেন সিধু। এরপর মানসা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচনেও লড়েন তিনি। কিন্তু আপ প্রার্থী ডা. বিজয় সিংলার কাছে ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু তাঁকে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে, পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসার ৫ মাসের মধ্যেই পাঞ্জাবের ৪২৪ জন ভিআইপির নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেয় আম আদমি পার্টির সরকার। আর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পরেই এই ঘটনা।
এতদিন সিধুর নিরাপত্তার জন্য চারজন কম্যান্ডো থাকলেও শনিবারই পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে ২ জনকে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ন্য দুইজন থাকলেও সিধু রবিবার তাঁর সঙ্গে তাঁদের যেতে বারণ করেছিলেন। এর উপর বুলেট প্রুফ গাড়িটিও নেননি। আততায়ীরা কীভাবে এই তথ্যগুলি জানতে পারল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :