বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আবারও কি দল বদলাবেন? এবার কি বিহারেও পালাবদল হবে? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিহারে জনতা দল এবং বিজেপির মধ্যেই রাজনৈতিক কোন্দল কি আরও তীব্র হবে? তবে, এই মুহূর্তে বিহারে বিজেপি- জনতা দলের মধ্যে দুরত্ব আরও বাড়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিহারে এই মুহূর্তে ওঠা যাবতীয় জল্পনা বাড়িয়েছেন খোদ জনতা দল সুপ্রিমো নীতীশ কুমার।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরেই নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে দুরত্ব বেড়েছে নীতীশ কুমার তথা জনতা দলের। এমনকি এবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে হওয়া নীতি আয়োগের বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন নীতীশ কুমার। নীতীশ কুমার আশঙ্কা করছেন মহারাষ্ট্রের মতোই পরিণতি হতে পারে বিহারেরও। তাই সাততাড়াতাড়ি দলের বৈঠকও ডেকেছিলেন তিনি। এমনকি বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট বেঁধে সরকার চালাতে পারেন নীতীশ। এমন সম্ভবনাও দেখা দিয়েছে। কিন্তু কেন এমনটা ঘটল?
রাজনৈতিকমহল বলছে, বিহারের জনতা দল এবং বিজেপির মধ্যে দুরত্বের সূত্রপাত হয়েছিল ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক সুশীল মোদী ছিলেন নীতীশ ঘনিষ্ঠ। কিন্তু এবারের সরকার গঠনের পরই তাঁকে সরিয়ে দেয় বিজেপি। ওই জায়গায় বসানো হয় তারকিশোর প্রসাদ এবং রেণু দেবীকে। এমনকী, সুশীলকে বিহারের বাইরে বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এটা একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি বিহারের জনতা দল। একের পর এক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘনিষ্ঠদের বিহারের মন্ত্রী করেছিল বিজেপি। এরপরই জেডিইউ-এর ধারণা হয় যে, বিহারের শাসনক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে বিজেপি। রাজ্যের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে দিল্লি থেকেই। যদিও বিজেপি শিবির থেকেও বেশ কিছু অভিযোগ ছিল। বিহারের বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে দলের মন্ত্রীদের পাত্তা দিচ্ছেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ক্রমশ দুরত্ব বাড়তে শুরু করে।
এদিকে, নীতীশ কুমার আবেগপ্রবণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত নন। তাই তিনি পরবর্তী সময়ে যে সিদ্ধান্তই নেবেন তা, নির্ভর করবে তাঁর সামনে কী বিকল্প রয়েছে তার উপর। এর পাশাপাশি অন্য দলগুলি যেমন, বিজেপি, আরজেডি এবং কংগ্রেস তাঁকে কী প্রস্তাব দিচ্ছে তার উপরেও নির্ভর করবে।
এদিকে, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, পাঁচ বছর পরে ফের বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে ‘মহাজোট’ গড়তে সক্রিয় হতে পারেন নীতীশ কুমার। সেটা হলে, রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ২০১৫-১৭ ব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে। বর্তমানে, সিপিআই-এমএল, সিপিআই এবং সিপিআই(এম) এর মতো বাম দলগুলিও জোটের অংশ। তবে নীতীশ কুমারের পক্ষে সেই অবস্থায় ফিরে যাওয়া খুব একটা সহজ হবে না। কারণ ২০১৫ থেকে ১৭ সালের মধ্যে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে যার জন্য তাঁর দায়ও নেহাত কম নয়। ২০১৭-য় তিনি যেভাবে এনডিএ-তে চলে যান জোট ভেঙে, তার পরিপ্রেক্ষিতে নীতীশ কুমারের প্রতি আস্থার বড় অভাব রয়েছে।
এছাড়াও আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। জেডিইউ ২০১৭-র তুলনায় অনেকটাই দুর্বল দল এই মুহূর্তে। তখন ৭১টি আসন ছিল, এখন আসন সংখ্যা মাত্র ৪৫। অন্যদিকে, আরজেডি শক্তিশালী হয়েছে এবং এখন আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ তে।
আপনার মতামত লিখুন :