বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এদিন সকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর বেঙ্গালুরু। নির্মীয়মাণ মেট্রোর পিলার আচমকা ভেঙে পড়ায় অকালেই চলে যেতে হল মা এবং তাঁর মাত্র আড়াই বছরের ছেলেকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা? এর পিছনে গাফিলতি কার? এইসব প্রশ্নের উত্তর খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে মেঙ্গালুরু মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে আউটার রিং রোড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, বাইকে করে বেঙ্গালুরুর HBR লে আউট এলাকার ওই রাস্তা দিয়ে স্বামী লোহিতের সঙ্গে যাচ্ছিলেন স্ত্রী তেজস্বিনী। সঙ্গে তাঁদের দুই সন্তানও ছিল। এদিকে, সেই সময় রাস্তার পাশেই নির্মীয়মাণ মেট্রোর কাজ চলছিল। বাইক ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকাই একটি নির্মীয়মাণ পিলার ভেঙে পড়ে রাস্তার উপর। এর জেরে ওই পিলারের নীচে চাপা পড়ে যান বাইকের চার আরোহী। ঘটনার পর তাঁদের প্রত্যেককে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে, বছর ৩০ এর তেজস্বিনী এবং তাঁর শিশুপুত্র বিহানের মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। প্রচুর পরিমাণে রক্তপাতও হয়। হাসপাতালে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি তেজস্বিনীর স্বামীও গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। প্রাণে বেঁচেছে ওই দম্পতির কন্যাসন্তানও। মেয়েও এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন দুর্ঘটনার সময় সকলেই হেলমেট পরে ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ এবং বেঙ্গালুরু মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এদিকে, ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। রাস্তার খানাখন্দের জন্যও এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে এবং আগামীতেও ঘটতে পারে বলে দাবি করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পাশাপাশি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। এই ঘটনায় কর্ণাটক সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিরোধীরা।
অন্যদিকে, মৃত মহিলার শ্বশুর বিজয়কুমারের অভিযোগ করেছেন যে, মেট্রো নির্মানের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেননি, যার জেরেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে নির্মান কাজ বন্ধ হওয়া উচিত বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবে ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমস্ত নিয়ম মেনেই নির্মান কাজ চলছে। তা সত্ত্বেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাফিলতি কোনও ব্যক্তি বিশেষের কিনা, তাও তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে। আর তেমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন বেঙ্গালুরু মেট্রোর এমডি অঞ্জুম পারভেজ। পাশাপাশি মেট্রো রেলের তরফে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :