বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জম্মু ও কাশ্মীরের পর এবার বিধানসভা নির্বাচনমুখী হিমাচল প্রদেশেও বিদ্রোহের মুখে কংগ্রেস। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের পথই অনুসরণ করলেন এবার কংগ্রেসের আর এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। দলের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। উল্লেখ্য, সামনেই রয়েছে হিমাচলপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন।
আর তার আগেই আনন্দ শর্মাকে হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেসের স্টিয়ারিং কমিটির দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন আনন্দ শর্মা। কারণ এই পদ তাঁর কাছে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ। তাই পদ ছাড়লেন কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতা। আনন্দ শর্মার এই সিদ্ধান্তের জেরে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিতে দল।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসের অন্তরবর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন, নিজের আত্মসম্মানের সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করতে রাজি নন তিনি। দলের তরফে তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করা হয়েছে। কারণ দলের কোনও বৈঠকেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তাঁর কোনো পরামর্শও নেওয়া হয় না। পরামর্শ প্রক্রিয়ায় তাঁকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে উপেক্ষা করা হচ্ছে বলেই দাবি কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতার। পদ ছাড়লেও, তিনি জানিয়েছেন যে, হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে তিনি প্রচারের কাজ চালিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মীরে আরেক টি-২৩ নেতা গুলাম নবি আজাদের নেতৃত্বে একইরকমের বিদ্রোহ দেখা গিয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন আজাদ। আবার ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের আর এক বর্ষীয়ান নেতা কপিল সিব্বল দলত্যাগ করেছেন। সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছেন সিব্বল। এদিকে, আনন্দ শর্মা সিব্বলের খুবই ঘনিষ্ঠ। তাছাড়া কপিল সিব্বল যে বিক্ষুব্ধ জি-২৩-র সদস্য ছিলেন, গুলাম নবি আজাদ এবং আনন্দ শর্মাও তাঁরই সদস্য। তাই সিব্বল ও আজাদের পর আনন্দ শর্মার এইভাবে দলের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও আনন্দ শর্মা নিজে জানিয়েছেন তিনি কংগ্রেসেই থাকবেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে আনন্দ শর্মা প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তাঁকে রাজ্যসভার টিকিট দিয়েছিলেন দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সেই থেকে তিনি একটানা রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি দলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বও সামলেছেন। আবার সামনেই রয়েছে হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা আবার সে রাজ্যেরই বাসিন্দা। পাশাপাশি স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি কংগ্রেসে রয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে অবধি তিনি কংগ্রেসের রাজ্যসভার উপনেতাও ছিলেন। কিন্তু দলের তরফে তাঁকে সদ্য সমাপ্ত হওয়া রাজ্যসভার নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁর জায়গায় স্থান দেওয়া হয়েছে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠদের। তাতেই ক্ষুব্ধেই বর্ষীয়ান নেতা। হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে, এই বড় মাপের নেতার পদত্যাগ হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের জন্য বড় ধাক্কা নিঃসন্দেহেই।
আপনার মতামত লিখুন :