বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবারই সকাল থেকে দেশের ১৩ টি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পিএফআই-এসডিপিআই সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে এনআইএ, ইডি ও রাজ্য পুলিশ। প্রায় ১১ টি রাজ্য থেকে ১০০- জনের বেশি পিএফআই সদস্য এবং এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্য করার অভিযোগে এঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
এরপরই সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও। প্রমাণ এবং এর পাশাপাশি এই দুই সংগঠনের গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত এবং সংগৃহীত তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই এদিন দেশজুড়ে তল্লাশি অভিযান চালায় এনআইএ এবং ইডি। এই অভিযানে অংশ নেয় রাজ্য পুলিশও। জানা গিয়েছে, এসডিপিআই এবং পিএফআই- এই সংগঠন একাধিক সন্ত্রাসবাদী ও ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল। মোট ১৩ টি রাজ্যে অভিযান চালানো হয়েছে। সেইসব রাজ্যের তালিকায় রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু- সহ একাধিক রাজ্য। এদিকে, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও এই তল্লাশি অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে, দেশজুড়ে তল্লাশির প্রতিবাদে শুক্রবার কেরলে বন্ধ ডেকেছে পিএফআই।
এদিন এই তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ১১ টি রাজ্য থেকে ১০০-র বেশি পিএফআই ও এসডিপিআই সদস্য ও এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণের রাজ্য কেরল থেকে সবথেকে বেশি গ্রেফতার হয়েছে। কেরল থেকে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি জন, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটক থেকে ২০ জন করে, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ৫ জন, অসম থেকে ৯ জন, দিল্লি থেকে ৩ জন, মধ্যপ্রদেশ থেকে ৪ জন, পুদুচেরি থেকে ৩ জন, তামিলনাড়ু থেকে ১০ জন, যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশ থেকে ৮ জনো এবং কংগ্রেসশাসিত রাজস্থান থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (PFI) ও এই সংগঠনের রাজনৈতিক দল সোশ্যালিস্ট ডেমোক্রেটিক পার্টি অব ইন্ডিয়া (SDPI)-র সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপে জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্য করা, দেশবিরোধী অভিযানে লিপ্ত থাকা, সন্ত্রাসবাদীদের জন্য ট্রেনিং ক্যাম্পের আয়োজন করা এবং সাধারণ মানুষদের বুঝিয়ে এই নিজেদের সংগঠনে যোগদান করানোর মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
সেইসব তদন্তে উঠে আসে যে, কাতার, কুয়েইত, তুরস্ক ও সৌদি আরবের মতো পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি থেকে সংগঠনের কাছে অবৈধভাবে অর্থ সাহায্য় পাঠানো হয়। তারপর থেকেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নজরে ছিল এই সংগঠন। দেশজুড়ে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে প্রত্যক্ষ মদত দেওয়াই নয়, এর পাশাপাশি যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে মৌলবাদী ভাবধারা তৈরিতেও এই অর্থ কাজে লাগানো হত। এদিকে সম্প্রতি ১৮ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার বিভিন্ন প্রান্তে পিএফআই সদস্যদের একাধিক ডেরায় তল্লাশি অভিযান চালায় এনআইএ। তারপর বৃহস্পতিবারের অভিযানে প্রায় ১০০ জনকে গ্রেফতার করল এনআইএ এবং ইডি।
আপনার মতামত লিখুন :