বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আর সেই প্রকল্পের বিরোধিতা করেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। অগ্নিপথের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত হয়েছে বিহারের একাধিক জেলা। রেল, সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বহু জায়গায়। সেনা নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া প্রকল্প মানতে একেবারেই নারাজ বিক্ষোভকারীরা।
এদিন সকালে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রেল ইঞ্জিনে আগুন ধরাতে যান বিক্ষোভকারীরা। তাদের রুখতে ভোজপুর পুলিশের পক্ষ থেকে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস সেল। স্টেশনের অসংখ্য সিট উপরে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের জেরে আটকে পড়ে বহু ট্রেন। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি এক প্রকার হাতের বাইরে চলে যায়। বিক্ষোভের ফলে রেল ও সড়ক যান চলাচলে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে রেলস্টেশন এবং রাস্তায় প্রায় ২৫ হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ছাপড়ার স্থানীয় বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে জানলার কাঁচ ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। বাজারের সড়কে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা। অন্যদিকে ৮০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। ফলে বেশ কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল ব্যাহত হয়। সমস্যায় পড়ে যাত্রীরা। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে সহরসা-মানসী রুটে ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হয়।
চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম চাকরি পাবে ঠিকই, কিন্তু চার বছর পরই অবসরের বিষয়টি একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। অবসরের পর কী করবেন তারা? এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জওয়ানদের চাকরির কোনও স্থায়িত্ব থাকবে না। কোনও নতুন প্রকল্প নয়, বরং সেনা নিয়োগের পুরনো ব্যবস্থা ফেরানোর দাবিই জানান চাকরিপ্রার্থীরা।
বিগত দু’বছর ধরে দেশে সেনা নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরই মাঝে নয়া প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’-এর ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেনা নিয়োগের পদ্ধতি, তাদের কাজের স্থায়িত্বতে আসবে নতুনত্ব। এই প্রকল্পের আওতায় নিযুক্ত জওয়ানদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’।
জানা গিয়েছে, প্রতিবছর মোট ৪৫ থেকে ৫০ হাজার সেনা জওয়ান নিয়োজিত হবে। তবে নিয়োগের মাত্র ২৫ শতাংশ আগামী ১৫ বছর কাজ করার সুযোগ পাবেন। বাকিরা নিয়োজিত হবেন মাত্র চার বছরের জন্য। বর্তমানে নিয়োজিত সেনা জওয়ানের সংখ্যা ১৩ লক্ষের বেশি। এরপর প্রতি বছর স্থায়ীভাবে মাত্র ২৪ হাজার জওয়ান নিয়োজিত হবে, যার সংখ্যাটা অত্যন্ত কম। অন্যদিকে পেনশন নিয়েও বিভিন্ন সময়ে সেনাকর্মীদের বহু অভিযোগ সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন প্রকল্পের সাহায্যে পেনশনের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছে সরকার। অন্যদিকে ব্যাপক হারে কমতে চলেছে স্থায়ী সেনার সংখ্যাও।
আপনার মতামত লিখুন :