২০১৬ সাল থেকেই বিহারে মদ নিষিদ্ধ। `১৬ সালের এপ্রিলে প্রতিবেশী রাজ্যে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নীতীশ কুমারের সরকার। তা সত্ত্বেও রমরমিয়ে চলছে মদ বেচা-কেনা। আর এবার বিষমদে প্রাণ হারালেন একাধিক জন। এমনকি দৃষ্টিশক্তিও হারিয়েছেন অনেকে।
বিহারে বিষাক্ত মদ খেয়ে এখনও অবধি ১১ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। আরও ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বহু মানুষ দৃষ্টি শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। প্রতিবেশী রাজ্যের সারন জেলার এই ঘটনায় আপাতত স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন ৫ মদের কারবারি।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার সারন জেলার ফুলওয়ারিয়া পঞ্চায়েতে প্রথমে বিষমদ খেয়ে ২ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও আরও একাধিকজন অসুস্থ ছিলেন। এই অবস্থায় ঘটনাস্থলে একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়৷ অসুস্থদের সদর হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। এরই মধ্যে গুরুতর অসুস্থ একাধিক জনকে পাটনার পিএমসিএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন আরও ৯ জনের মৃত্যু হয় বলে খবর।
প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় এক হিন্দু রীতি অনুযায়ী শ্রাবণ মাসের নির্দিষ্ট তিথিতে স্থানীয়রা মদ পান করেন। এ বছর ৩ অগাস্ট পড়ে সেই দিন। আর রীতি পালনের জন্য সেই দিনেই বিষ মদ পান করে বসেন এলাকার একদল বাসিন্দা৷ তারপরই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারাও যান একাধিক মানুষ।
বর্তমানে পাটনার পিএমসিএইচ হাসপাতালেই বিষমদ খেয়ে গুরুতর অসুস্থ আরও ১২ জনের চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এদিকে পুলিশ আবার এও জানিয়েছে, প্রশাসন খবর পাওয়ার আগেই মদের বিষক্রিয়ায় মৃত একজনকে দাহ করে ফেলা হয়েছে। এদিকে, ঘটনার জেরে আপাতত ৫ মদের কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই পাঁচ কারবারিই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মদ তৈরি করে বিক্রি করতেন বলে পুলিশের অনুমান। এছাড়াও স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, বিহারে এমন ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। বিষাক্ত মদ খেয়ে গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের এখনও অবধি প্রায় ৫০ জনে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সে রাজ্যে আজও রমরমিয়ে চলে অবৈধ মদের কারবার। এমনটাই অভিযোগ রাজ্যের বিরোধী দলগুলির। এবার আরও একবার বিষমদের কারণে মৃত্যুর ঘটনায় নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে ফের সরব বিরোধীরা।
আপনার মতামত লিখুন :