আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। বাঙালির দৌড়গোরায় এসে গেছে পুজো। আর দুর্গাপুজোর ৭ দিন আগে মহালয়া হয়ে থাকে তা আমরা সকলেই জানি। এদিন পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে থাকে। মহালয়ার দিন ভোর ভোর উঠে মহালয়া দেখার এক আলাদায় আনন্দ। ছোটো থেকে বড় অনেকেই এদিন ভোরবেলায় বাজি ফাটিয়ে থাকে।
অন্যদিকে এই দিন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি রয়েছে। তাই ভরবেলা থেকেই বহু মানুষ তাঁদের পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে যান। তবে হিন্দু ধর্মে এই বিশেষ দিনটির গুরুত্বও অনেক। এই দিনের এক বিশেষ তাৎপর্যও রয়েছে। মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। আর দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয়।
আবার মহালয়া শুভ না অশুভ তা নিয়েও নানা মত পার্থক্য রয়েছে। চলুন এবিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক..
মহালয়ার দিনটি শুভ কেন? মহালয়া থেকেই দেবীপক্ষের সূচনা। এদিন সকল অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। আর এদিনের পর থেকেই দুর্গাপুজোর গন্ধ আকাশে বাতাসে পাওয়া যায়। মহালয়া বয়ে আনে আনন্দ, আশা, শুভ চিন্তা। খুশিতে ভরে ওঠে মানুষের মন। তাই মহালয়া শুভ। এছাড়াও এদিন পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়ে থাকে। আর সেটি জগৎব্যাপী এক মহামিলনেরও ইঙ্গিত। তাই এদিনকে শুভ মানা হয়।
মহালয়ার দিনটি অশুভ কেন? অন্যমতে, মহালয়ার দিনটিতে যেহেতু পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি রয়েছে, সেকারণে এদিন পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। অনেকেই তাই মনে করেন এ দিনটি শোক পালনের দিন। তাই সেই অর্থে অশুভ না মানা হলেও শোকের দিন মানা হয় মহালয়ার দিনকে৷
মহালয়ার তাৎপর্য: কথিত আছে, মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পুরাণ মতে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর ছিলেন অমর। শুধুমাত্র কোনও নারীশক্তির কাছে পরাজয় নিশ্চিত ছিল তাঁর৷ অন্যদিকে অসুরদের অত্যাচারে যখন দেবতারা কোনো কূল পাচ্ছিলেন না, সে সময় ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর নারীশক্তির সৃষ্টি করেন। আর তিনিই হলেন মহামায়ারূপী দেবী দুর্গা। তাঁর দশ হাতে উঠল দেবতাদের দেওয়া অস্ত্র। তা দিয়েই মহিষাসুরকে বধ করেন দেবী দুর্গা। তাই এককথায় বলা যায় দুর্গাপুজো হল অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভ শক্তির সূচনা৷
মহালয়ার দিনক্ষণ : এই বছর মহালয়া ২৫ সেপ্টেম্বর (৮ আশ্বিন), রবিবার। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, মহালয়ার অমাবস্যা তিথি শুরু ২৫ সেপ্টেম্বর (৮ আশ্বিন), রবিবার রাত ২.৫৭ মিনিট থেকে। তা থাকবে ২৬ সেপ্টেম্বর ( ৯ আশ্বিন), ভোর ৩.২৫ মিনিট পর্যন্ত।
আপনার মতামত লিখুন :