বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সেই দিনটা এখনও মানুষের স্মৃতিতে টাটকা। ২৯ অক্টোবর, ২০২১। সেদিন কন্নড় চলচ্চিত্রের জগতে বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়। আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন পুনিত রাজকুমার।
তাঁকে শেষবারের মতো চোখের দেখা দেখতে সেদিন বেঙ্গালুরুর রাস্তায় অজস্র মানুষের ঢল নেমেছিল। চোখের জল সেদিন বাধ মানেনি। চোখের জলেই তাঁকে শেষ বিদায় জানিয়েছিল তাঁর অগণিত ভক্ত। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে তাঁর এভাবে চলে যাওয়া অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। তাই প্রিয় তারকার মৃত্যুতে তাঁর ৭ অনুরাগী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আবার তিন অনুরাগী পুনিত রাজকুমারের মতোই চক্ষুদান করেছিলেন।
পুনিত না ফেরার দেশে চলে গেছেন প্রায় ৫ মাস হয়ে গেল। কিন্তু এখনও তাঁর ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাঁর বৃদ্ধা পিসি নগমা। কারণ আজও তিনি জানেন না প্রকৃত সত্য। তিনি জানেন না যে, তাঁর প্রিয় ভাইপো আর বেঁচে নেই। সূত্রের খবর, নগমা হলেন, ডঃ রাজকুমারের ৯০ বছর বয়সী দিদি, পরিবারের সবথেকে প্রবীণ সদস্য তিনি। পুনিত অর্থাৎ আপ্পু তাঁর সবথেকে প্রিয় ভাইপো। হাজারও ব্যস্ততার মধ্যেই প্রায়শই গাজানুরে তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে পিসির সঙ্গে দেখা করত যেতেন পুনিত। কিন্তু গত ৫ মাসে পুনিতকে কাছে পাননি তাঁর বৃদ্ধা পিসি। তাই বারবার তাঁর খোঁজ করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই তাঁকে বলা হয়েছে, বিদেশে শুটিং করতে গেছে পুনিত। খুব শীঘ্রই সে ফিরে আসবে এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করবে। এরপরই পুনিতের ছবি চালিয়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। যা দেখেই মন ভাল হয়ে যায় বৃদ্ধা পিসির।
বৃদ্ধা পিসির থেকে প্রিয় ভাইপোর বিয়োগের কথা লুকিয়ে রাখার সব থেকে বড় কারণ হল, কিছু বছর আগে যখন পুনিতের দাদা রাঘবেন্দ্র রাজকুমার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁদের এই পিসি। এমনকি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়েছিল। তাই তাঁকে পুনিতের প্রয়াণের খবর জানানো হয়নি।
পরিবারের সকল সদস্য তাঁকে সবসময় ঘিরে থাকেন। বাড়িতে পুনিতের কোনও ছবিতে মালা দেওয়া হয় না। এমনকি যারা পুনিতের পিসির সঙ্গে দেখা করতে আসেন, সেইসব আত্মীয়স্বজনদেরও বলা আছে যে, তাঁরা যেন ঘুণাক্ষরেও পুনিতের প্রসঙ্গ না তোলেন। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে দেখা করেন পুনিতের আর এক দাদা। তিনিও পুনিতের কথা এড়িয়ে যান খুব সাবধানে।
এখনও প্রিয় ভাইপো পুনিতের অপেক্ষায় দিন গুনছেন বৃদ্ধ পিসি। বিদেশ থেকে ফিরে যেকোনো মুহূর্তে ছুটে আসবে সে পিসির কাছে। এমনটাই ভাবছেন বৃদ্ধা পিসি নগমা। কিন্তু ক্রমশ অপেক্ষা দীর্ঘতর হচ্ছে। পিসি যে জানেনই না যে, তাঁর প্রিয় আপ্পু আর ফিরবে না কখনও। সে যেখানে চলে গেছ, সেখান থেকে যে আর ফেরা যায় না।
আপনার মতামত লিখুন :