বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলা টেলিভিশন দুনিয়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দে’র রহস্যজনক মৃত্যুতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চর্চা। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, আত্মহত্যা করেছেন অভিনেত্রী। তবে, প্রেমিক সাগ্নিকের বিরুদ্ধে উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পরিবার সূত্রে খবর তাঁরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁরা আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন বলেই সূত্রের খবর। অভিনেত্রীর সহকর্মী,পরিবারের সদস্য বন্ধু, তাঁর গড়ফার ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার, আশপাশের বাসিন্দারা যা বলছেন, তা সবই সাগ্নিকের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিকের অন্য সম্পর্কও ছিল। সাগ্নিকের আগে একটি রেজিস্ট্রি বিয়েও হয়েছিল। এখনও ডিভোর্স হয়নি সাগ্নিকের। ফ্ল্যাটে একাধিক পুরুষ বন্ধু আসত, যা নিয়ে আপত্তি ছিল পল্লবী এবং অন্যান্য বাসিন্দাদের। আপত্তির কথা অন্যান্য বাসিন্দারা জানিয়েওছিলেন। যা নিয়ে সাগ্নিক এবং পল্লবীর মধ্যে অশান্তিও হয়। ফ্ল্যাটের কাজের লোকও জানিয়েছেন যে, তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত যা হাতাহাতির পর্যায়েও গেছে কয়েকবার।
এদিকে, জানা গিয়েছে যে পল্লবীর অনেক ঋণ ছিল একটি ফ্ল্যাট এবং নতুন গাড়ি কিনেছিলেন পল্লবী। যা কিনতে অনেক টাকা দিয়েছিলেন পল্লবী। এদিকে, পল্লবীর প্রেমিকের দাবি, আর্থিক কারণে প্রবল চিন্তায় ছিলেন পল্লবী। গাড়ি-সহ একাধিক জিনিস ইএমআই-তে কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু ‘মন মানে না’ সিরিয়ালের পর তেমন কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না অভিনেত্রী। তাই ইএমআই কীভাবে শোধ করবেন তা চিন্তায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তিনি বারবার পল্লবীকে বোঝানের চেষ্টা করেছেন বলেও দাবি করেছেন সাগ্নিকে। পুলিশ সাগ্নিকের বক্তব্য যাচাই করে দেখছে। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হলে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে, পল্লবীর পরিবারের দাবি, গাড়ি ও নতুন ৮০ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কিনতে বেশি টাকাই পল্লবী দিয়েছিলেন। অথচ নতুন ফ্ল্যাট ছিল সাগ্নিক ও তাঁর বাবার নামেই। তাছাড়া পল্লবী এবং সাগ্নিকের একাধিক জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছিল বলে জানিয়েছেন পল্লবীর বাবা। ঘটনার আগের দিন অশান্তি হয় বলেই খবর। এমনকি সম্প্রতি পল্লবী তাঁর বন্ধুদের কাছেও জানিয়েছিলেন যে, তিনি এই সম্পর্ক থেকে তিনি বেরোতে চান।
প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অভিনেত্রী পল্লবী দে-এর ঝুলন্ত দেহ। বর্তমানে তিনি কালার্স বাংলায় ‘মন মানে না’ ধারাবাহিকে গৌরীর ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন। গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুর এলাকার এক বহুতলে থাকতেন অভিনেত্রী পল্লবী। জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক ধরে সাগ্নিক নামের এক যুবকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। দু’জনে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে পল্লবী এবং তাঁর প্রেমিক আলাদা আলাদা ঘরে ঘুমোতে যান। সকালে উঠে দেখেন পল্লবীর ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর তাঁর প্রেমিক লক হোল দিয়ে দেখেন বিছানার চাদর দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন অভিনেত্রী। জোরে ধাক্কা দিয়ে দরজা ভাঙে ঘরে ঢোকেন সাগ্নিক। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় এমআর বাঙুর হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিনেত্রীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সহ-অভিনেতা ও ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা। এদিকে, ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি পল্লবীর দেহে কোনও আঘাত বা ক্ষতের চিহ্নও মেলেনি। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :