বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিবাহিত জীবনের আয়ু মাত্র ৫ মাস। বাইরে থেকে দেখে সুখের সংসার বলেই মনে হবে। কিন্তু ছন্দপতন হল ৫ মাসের মধ্যেই, একদিন আচমকাই অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসলেন স্বামী। তখন স্ত্রী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পরেও শেষরক্ষা হল না। বাঁচানো যায়নি বছর ২০-র প্রিয়াঙ্কাকে।
বাকি সবার চোখে প্রিয়াঙ্কার মৃত্যু স্বাভাবিক মনে হলেও, তা মানতে চাননি মৃতার পরিবার। তাঁদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। মেয়ের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার পুলিশে গার্হস্থ্য হিংসা এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করে। এরপর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে নেমেই চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে পুলিশের হাতে। জানা যায় যে, স্বামীই খুন করেছে প্রিয়াঙ্কাকে। চিকিৎসকদের চোখে ধুলো দিতে হাসপাতাল থেকে চুরি করা ওষুধই ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে স্ত্রীকে দিয়েছিল প্রিয়াঙ্কার স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুনেতে। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বছর ২৩-এর যুবককে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ করে। সেই কারণেই বিভিন্ন ওষুধ সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান রয়েছে। স্ত্রীকে খুনের জন্যও ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে সে। স্ত্রীকে ওষুধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দিয়ে সেটা আত্মহত্যা বলে প্রমাণ করতে চেয়েছিল অভিযুক্ত যুবক।
জানা গিয়েছে অভিযুক্ত যুবকের নাম স্বপ্নীল সাওয়ান্ত, ৫ মাস আগেই প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁরা একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এদিকে, যে বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের কাজ করে স্বপ্নীল, সেখানেও এক নার্সের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়াঙ্কা। তাই প্রিয়াঙ্কাকে নিজেদের রাস্তা থেকে সরানোর পরিকল্পনা করে স্বপ্নীল। যদিও পুলিশ জানিয়েছেন, প্রিয়াঙ্কা স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।
১৪ নভেম্বর প্রিয়াঙ্কাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁর স্বামী। সেখানেই কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে, বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। তবে, তদন্তে নেমে পুলিশ স্বপ্নীলের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা ও আত্নহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করে।
তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, চুপিসাড়ে স্বপ্নীল হাসপাতাল থেকে ভেকিউরোনিয়াম ব্রোমাইড, নাইট্রোগ্লিসারিন ইঞ্জেকশন-সহ একাধিক ওষুধ চুরি করেছিল। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওই ওষুধ প্রিয়ঙ্কার শরীরে দিয়েই তাঁকে খুন করে স্বপ্নীল। পুলিশ ইতিমধ্যেই স্বপ্নীলকে গ্রেফতার করছে এবং তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :