বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ বিকেলেই রাজ্য মন্ত্রিসভায় ৯ মন্ত্রী শপথগ্রহণ করেছেন। ব্যাপক রদবদল হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়। এদিন নতুন মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যের অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশন। মোট ৯ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৫ জন পূর্ণমন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রী হচ্ছেন প্রদীপ মজুমদার, পার্থ ভৌমিক, বাবুল সুপ্রিয়, উদয়ন গুহ ও স্নেহাশিষ চক্রবর্তী। মন্ত্রিসভায় নতুন মুখদের তালিকায় রয়েছেন প্রদীপ মজুমদার, পার্থ ভৌমিক, উদয়ন গুহ, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বাবুল সুপ্রিয়, বিপ্লব রায়চৌধুরী, তাজমূল হোসেন, সত্যজিৎ বর্মন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন বীরবাহা হাঁসদা ও বিপ্লব রায়চৌধুরী। আর প্রতিমন্ত্রী হলেন তাজমুল হোসেন ও সত্যজিৎ বর্মণ। এদিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভার অধ্যক্ষ ছাড়াও বাকি মন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি আমন্ত্রিত ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। ছাড়াও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
২০২১ সালে তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল মন্ত্রিসভায় এটিই সবথেকে বড় রদবদল নিঃসন্দেহে। এদিকে, ৯ মন্ত্রীর শপথগ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের মধ্যে দফতর বণ্টন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব পেলেন নতুন মন্ত্রিরা। এর পাশাপাশি পুরনো একাধিক মন্ত্রীর দায়িত্ব যেমন কমিয়েছেন, তেমনই কিছু মন্ত্রীর দায়িত্ব বেড়েওছে।
রাজ্য মন্ত্রিসভায় পুরনোদের মধ্যে দায়িত্ব কমানো হয়েছে ফিরহাদ হাকিমের। তিনি কলকাতার মেয়র। আবার তিনি রাজ্যের পরিবহণ, পুর ও নগরোন্নয়ন এবং আবাসন মন্ত্রী ছিলেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি দলের অন্দরেও একাধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই এবার তাঁর উপর থেকে কিছুটা দায়িত্বভার কমানো হল। পরিবহণ এবং আবাসন দফতরের হাতবদল করা হল। ফিরহাদের হাতে থাকা আবাসন দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব হাতে পেলেন অরূপ বিশ্বাস। গুরুত্ব কমেছে মন্ত্রী মলয় ঘটকেরও। তাঁর হাতে থাকা পূর্ত দফতর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে শুধুমাত্র আইন এবং শ্রমমন্ত্রী থাকলেন তিনি। পূর্ত দফতরের দায়িত্ব পেলেন পুলক রায়।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। এতদিন তাঁর হাতে ছিল পরিষদীয় দফতর। এবার এই দফতরের মন্ত্রী হলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি কৃষি দফতরও তাঁর হাতেই রয়েছে। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি দায়িত্ব বেড়েছে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার। নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের পাশাপাশি শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী হলেন শশী পাঁজা। এই দফতরও আগে ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে।
এবার দেখে নেওয়া যাক নতুনদের মধ্যে কে কোন দফতরের দায়িত্ব পেলেন। পূর্ণমন্ত্রীদের মধ্যে বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয় পেলেন রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি ও পর্যটন দফতরের দায়িত্ব। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পেলেন প্রদীপ মজুমদার। সেচ ও জলপথ দফতরের মন্ত্রিত্ব পেলেন পার্থ ভৌমিক। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পেলেন কোচবিহারের বিধায়ক উদয়ন গুহ। এছাড়াও ফিরহাদ হাকিমের দায়িত্ব কমিয়ে পরিবহণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
এদিকে, বীরবাহা হাঁসদা বোন এবং স্বনির্ভর দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হলেন। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মৎস্য প্রতিমন্ত্রী হলেন বিপ্লব রায় চৌধুরী। অন্যদিকে, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী হলেন তাজমুল হোসেন। এতদিন শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন পরেশ অধিকারী। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম জড়ানোয়, তাঁকেও দায়িত্ব থেকে সরানো হল। সেই জায়গায় শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে এলেন সত্যজিৎ বর্মন।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার রদবদলের পর বাদ পড়লেন হুমায়ুন কবীর সৌমেন মহাপাত্র, রত্না দে নাগ এবং পরেশ অধিকারী। আর গুরুত্ব বাড়ল শোভনদেব, শশী পাঁজা, অরূপ বিশ্বাস এবং পুলক রায়ের। আবার ইন্দ্রনীল সেনের থেকে পর্যটন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাবুল সুপ্রিয়কে।
আপনার মতামত লিখুন :