বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ লেকটাউনে গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু। শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হল বধূর ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে লেকটাউনের দক্ষিণদাঁড়ি এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, মৃত গৃহবধূর স্বামী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি আত্মহত্যা করেছেন স্ত্রী। এদিকে, ইতিমধ্যেই খুনের অভিযোগে ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর এবং ননদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বধূর দেহের একাধিক জায়গায় আঁচড় ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম পায়েল রায়। তাঁর বাপের বাড়ি সল্টলেকে। ২০১৮ সালে বছর ২৯ বছরের পায়েলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল লেকটাউনের দক্ষিণদাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা সুমনের। তাঁদের একটি তিন বছরের ছেলেও রয়েছে। সুমন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কাজ করেন। মৃতার মায়ের অভিযোগ, আপাতভাবে সব ঠিক থাকলেও, জামাইয়ের সন্দেহবাতিক ছিল। মেয়েকে সন্দেহ করতেন সবসময়। এর আগেও এই সন্দেহবাতিকের জন্যই অত্যাচার করা হত পায়েলকে। পায়েলকে মারধরও করতেন তাঁর স্বামী। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাঁকে মারধর করে খুন করেছে।
অন্যদিকে, পায়েলের স্বামীর পাল্টা দাবি, তাঁর স্ত্রীর একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই নিয়ে প্রায়ই দুজনের মধ্যে অশান্তি হত। ক্রমশ তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল। গতকাল অর্থাৎ রবিবারও তাঁদের মধ্যে এই বিষয়ে অশান্তি হয়। সন্ধ্যাবেলায় যখন তিনি বাথরুমে গিয়েছিলেন, সেই সময়ই পায়েল আত্মঘাতী হন বলেই দাবি করেছেন সুমন। বাথরুম থেকে বেরিয়েই তিনি পায়েলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। যদিও মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী, ননদ এবং শ্বশুরকে রাতেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লেকটাউন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ গতকালই।
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধের পর পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর বাপের বাড়িতে জানায় যে, তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পায়েলের পরিবারের দাবি, আত্নহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে তাঁকে।
রবিবার ঘটনার খবর পেয়েই লেকটাউন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বধূর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। খুন না আত্মহত্যা করেছেন পায়েল রায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরুও হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, পায়েলের দেহের একাধিক জায়গায় আঁচড় ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। জেরা করা হচ্ছে পায়েলের স্বামী, শ্বশুর এবং ননদকে। পুলিশ আশা করছে, এই জেরা থেকে অনেক তথ্যই উঠে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :