বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তিনি চলে গিয়েছেন, রয়ে গেছে তাঁর স্মৃতি আর অসাধারণ, চিরসবুজ সব গান। একটা নতুন দিন, একটা নতুন সকাল। অথচ সেই সকালে নেই কেকে। যিনি গতকাল পর্যন্ত নিজের সুরের জাদু দিয়ে মাতিয়েছেন অগণিত শ্রোতাকে। গান গেয়ে মঞ্চে আগুন ঝড়িয়েছেন। আজ শুধু তিনিই নেই। আরও কোনও দিন এভাবে মঞ্চ মাতাবেন না তিনি।
কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। এক বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী, ভারত জোড়া তাঁর খ্যাতি। কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে প্রয়াত হয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে। জীবনের শেষটাও গানের মধ্যে দিয়েই হল। ইহজগত ছেড়ে এক অন্য সুরের জগত মাতাতে পাড়ি দিয়েছেন কেকে। কাকতালীয়ভাবে কাল নজরুল মঞ্চে কেকে’র শেষ গান ছিল তাঁর সেই বিখ্যাত ‘হাম রহে ইয়া না রহে ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল’। এই গানের কথাকে এই জীবনে এমনভাবে সত্যি করে দিয়ে চলে যাবার মতো শিল্পী মানুষ খুব কমই এই ধরায় জন্ম নেন। আর কেকে তাঁদেরই একজন।
রবীন্দ্র সদনে গান স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হল গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে ফুল দিয়ে এই জনপ্রিয় গায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পরেই কেকে-এর কফিনবন্দি দেহে মালা দেন তাঁর স্ত্রী জ্যোতি কৃষ্ণা এবং পুত্র নকুল কৃষ্ণা কুন্নাথ। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের আরও দুই সদস্য। এরপরই গান স্যালুট দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় শিল্পীকে।
আজ খুব অল্প সময়ের জন্যই রবীন্দ্র সদনে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দুপুরে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মাঝপথেই ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, রবীন্দ্র সদনেই প্রয়াত শিল্পীদের শ্রদ্ধা জানানো হয়, তাই প্রয়াত শিল্পী কেকে-কেও এখানেই আনা হবে। তার আগে অবশ্য কলকাতা বিমানবন্দরে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, রবীন্দ্র সদনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে শিল্পীকে।
এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ময়নাতদন্তের পর, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শিল্পীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। এদিকে, বিমানবন্দর থেকে সোজা রবীন্দ্র সদনে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে এদিন শিল্পীর জন্য রাখা ছবিতে নিজে হাতে ফুল দিয়ে সাজাতেও দেখা যায়। পরে কেকে-এর দেহ রবীন্দ্র সদনে এলে, শিল্পীর স্ত্রীকে সর্বক্ষণ আগলে রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন স্বামীর ছবির সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী জ্যোতি, শিল্পীর শোকসন্তপ্ত স্ত্রীর পিঠে স্নেহস্পর্শ দেন মমতা এবং সান্ত্বনা দিয়ে আগলে নিয়ে যান কফিনের সামনে। এদিন শিল্পীর দেহ নিয়ে ফিরতে কলকাতা বিমানবন্দরে যাতে কোনও অসুবিধায় পড়তে না হয়, তার জন্য বিমানবন্দরে যাবতীয় কাগজপত্রের কাজ সঠিকভাবে সারতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে খেয়াল রাখা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :