শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

‘আনিসের বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি আইন মেনে হয়নি’, হাইকোর্টে স্বীকারোক্তি রাজ্যের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২২, ০৩:৩৫ পিএম | আপডেট: মে ১৭, ২০২২, ০৯:৪৪ পিএম

‘আনিসের বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি আইন মেনে হয়নি’, হাইকোর্টে স্বীকারোক্তি রাজ্যের
‘আনিসের বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি আইন মেনে হয়নি’, হাইকোর্টে স্বীকারোক্তি রাজ্যের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আনিস খান রহস্যমৃত্যু মামলায় নয়া মোড়। আমতার ছাত্রনেতা আনিস খান আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে খুনও করা হয়নি। খুনের জন্য পুলিশের কোনও মোটিভ ছিল না। তিনি দুর্ঘটনাজনিত হত্যার শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই জানালেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। এককথায় পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে আনিস খানের। এমনটাই আদালতে জানাল রাজ্য। পাশাপাশি পুলিশের গাফিলতিও মেনে নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকায় রাজ্য সরকার যে একেবারেই সন্তুষ্ট নয়, সেটাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকারের আইনজীবীর বক্তব্যে।  

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত পুলিশের পক্ষে সওয়াল করছি না। আত্মহত্যা হয়েছে, এ কথাও কেউ বলছে না। এটা দুর্ঘটনাজনিত হত্যা। কিন্তু, যেহেতু এখানে কোনও সাক্ষী নেই, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।’ তিনি জানিয়েছেন, আনিসকে ব্যক্তিগতভাবে কেউ চিনতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে পকসো ধারায় একটি মামলা ছিল। হিজাব সংক্রান্ত পোস্ট নিয়েও একটি জটিলতা ছিল। ঘটনার দিন আনিসকে গ্রেফতার করতেই গিয়েছিল পুলিশ। সম্ভব সেই সময় আনিস পালানোর চেষ্টা করেন। তবে, তিনি তাঁর বক্তব্যে এও বলেছেন যে, ঘটনার দিন পুলিশি তল্লাশি আইন মোতাবেক হয়নি। তথ্য বলছে এতে পুলিশের কোনও খুনের মোটিভও ছিল না। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি এর জন্য অ্যাডিশনাল এসপিকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও আদালতে বলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। 

এদিন রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আনিস খানের ফোন হায়দরাবাদের ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আইনজীবীর সঙ্গে কথোপকথনও মিলেছে। এক আইনজীবী বলছেন, ‘তুমি এবার অ্যারেস্ট হবে।’ আনিস খানের মামলায় কোন পর্যায়ে তদন্ত হচ্ছে সে বিষয়ে চিন্তায় কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন এমনটাই জানিয়েছেন বিচারপতি।

অন্যদিকে, CFSL- এর রিপোর্ট মোতাবেক, আনিস খান আত্মহত্যা করেননি। হয় কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে নয়ত তিনি কোনোভাবে তিনি নিজে পড়ে গিয়েছেন। যেভাবেই হোক ছাদ থেকে পড়ে গিয়েই যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে সেটা ফরেন্সিক রিপোর্টে স্পষ্ট। এদিন আদালতে পলিগ্রাফ টেস্টের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়। ওই ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী না থাকার জন্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিতে হবে বলেও এদিন সওয়াল করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৭ জুন। 

উল্লেখ্য, আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে আজ সিট-এর রিপোর্টে একাধিক অসঙ্গতি ধরে আদালত। আবার এই সিটের রিপোর্ট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে আনিস খানের পরিবারের আইনজীবীও। এমনকি সিটের বিরুদ্ধে মূল অভিযুক্তদের বাঁচানোর অভিযোগ তুলেছেন আনিসের পরিবারের আইনজীবী। পরিবার এবং আইনজীবীর দাবি, ‘মৃত্যুর আগে দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। কিন্তু সেটার বিষয়ে অবহেলা করছে সিট। অথচ ঠেলে ফেলা বা পড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত আছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। সিট সেটাও অস্বীকার করছে।’ তাই সিবিআই তদন্ত দিয়ে সরাসরি খুনের ধারা প্রয়োগের আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।