শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

একরত্তি মেয়ের শরীরে একাধিক সূচ বিঁধিয়ে হত্যা! হাইকোর্টে রদ মা ও প্রেমিকের ফাঁসির সাজা

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২২, ০৫:৩৯ পিএম | আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২২, ১১:৪৪ পিএম

একরত্তি মেয়ের শরীরে একাধিক সূচ বিঁধিয়ে হত্যা! হাইকোর্টে রদ মা ও প্রেমিকের ফাঁসির সাজা
একরত্তি মেয়ের শরীরে একাধিক সূচ বিঁধিয়ে হত্যা! হাইকোর্টে রদ মা ও প্রেমিকের ফাঁসির সাজা / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মাত্র ৩ বছরের একরত্তি মেয়ের শরীরে একাধিক সূচ বিঁধিয়ে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা। ২০১৭ সালের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনায় আতঙ্কে শিউরে উঠেছিল গোটা বাংলা। একরত্তি ফুটফুটে শিশুকন্যাকে এমন নারকীয়ভাবে হত্যার ঘটনায় অভিযোগের তীর ছিল তার মা এবং মায়ের তান্ত্রিক প্রেমিকের দিকে। পরে ওই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০২১ সালে ফাঁসির সাজা শোনায় পুরুলিয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। কিন্তু সেই রায় রদ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের ফাঁসির সাজা রদ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে-এর ডিভিশন বেঞ্চ।

হাইকোর্টে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন পুরুলিয়া সূচ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মঙ্গলা গোস্বামী এবং তার প্রেমিক সনাতন ঠাকুরকে ফাঁসির সাজা থেকে মুক্তি দিল। তবে, এর পাশাপাশি উচ্চ আদালত জানিয়েছে যে, ৩০ বছর পর্যন্ত মুক্তির আবেদন করতে পারবে না সনাতন। ফাঁসির সাজা রদ করে এদিন দুজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় আদালত।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই তিন বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে সূচ ফুটিয়ে খুন করে মা মঙ্গলা গোস্বামী এবং তার প্রেমিক সনাতন ঠাকুর। পেশায় কীর্তনশিল্পী তথা তান্ত্রিক সনাতনের বিরুদ্ধে ওই শিশুটির শরীরে সাত-সাতটি সূচ ফুটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয় মঙ্গলার ৩ বছরের শিশুকন্যাকে। পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তার শরীরে ৭ টা সূচ ঢোকানো আছে।

এরপর গুরুতর অসুস্থ ওই শিশুকে প্রথমে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির শরীর থেকে ৭ টি সূচই বের করা হয়। কিন্তু তাও বাঁচানো যায়নি একরত্তিকে। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ২১ জুলাই মৃত্যু হয় শিশুটির। এরপরের দিনই গ্রেফতার করা হয় ওই শিশুকন্যার মা মঙ্গলাকে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও বারবার মঙ্গলা নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে এসেছেন।

এদিকে, ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ঘটনার প্রায় ৪ বছর পর ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত। যা এদিন পরিবর্তন করে কলকাতা হাইকোর্ট যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে। উল্লেখ্য, ৫ বছর আগে ওই শিশুটিকে দেখেই শিউরে উঠেছিলেন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দীনবন্ধু সাহানা। ডাক্তারি পরিভাষায় শিশুর শরীরে ব্যাটার্ড চাইল্ড সিনড্রোম দেখেই চমকে উঠেছিলেন তিনি। প্রথম প্রকাশ্যে আনেন তিনি যে, ওই একরত্তি শিশুটি অকথ্য অত্যাচারের শিকার৷ এরপর ভালো করে পরীক্ষার পরই বেরিয়ে আসে আসল সত্যি।