শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

একমাস আগেই হারিয়েছেন স্বামীকে! মানসিক অবসাদের জেরে চরম পদক্ষেপ মা ও মেয়ের

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২, ০১:১২ পিএম | আপডেট: মে ২৭, ২০২২, ০৭:১২ পিএম

একমাস আগেই হারিয়েছেন স্বামীকে! মানসিক অবসাদের জেরে চরম পদক্ষেপ মা ও মেয়ের
একমাস আগেই হারিয়েছেন স্বামীকে! মানসিক অবসাদের জেরে চরম পদক্ষেপ মা ও মেয়ের

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সল্টলেকে একইসঙ্গে মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য। জানা গিয়েছে, মানসিক অবসাদের জেরেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। মৃতদেহের পাশ থেকে মিলেছে সুইসাইড নোট। সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে ২০ হাজার টাকাও। ইতিমধ্যেই দুজনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ।

জানা গিয়েছে, ৫৫ বছর বয়সী আত্মঘাতী মহিলার নাম সুপর্ণা ঘোষ। তাঁর মেয়ে স্নেহা ঘোষ। মা-মেয়ে দুজনেই সল্টলেক সিডি ব্লকের ১৭৪ নম্বর বাড়ির তিন তলায় বসবাস করতেন। প্রতিবেশীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলেই শেষবারের মতো তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সুপর্ণা ঘোষ। এরপর শুক্রবার সকালে হঠাৎই প্রতিবেশীরা খেয়াল করেন, তাঁদের ঘরের ভেতর থেকে জল বেরিয়ে আসছে। কিন্তু বারবার ডাকাডাকি সত্ত্বেও তাঁদের কোনও সাড়া মেলে না।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফ থেকে সুপর্ণা ঘোষের বান্ধবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রতিবেশী ও বন্ধুরা সকলে বারবার চেষ্টা করেও সুপর্ণার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে অসমর্থ হন। এমনকি বাড়ির দরজার লাগাতার ধাক্কা মারলেও কেউ সাড়া দেন না। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের মনে সন্দেহের সঞ্চার হয়। এরপরই তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বিধাননগর উত্তর থানায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দরজা ভেঙে দেখা যায় খাটের ওপর পড়ে রয়েছে মেয়ে স্নেহা ঘোষের দেহ। অন্যদিকে খাটের ঠিক পাশেই মেঝেতে পড়ে রয়েছে সুপর্ণা ঘোষের নিথর দেহ। মৃতদেহের পাশ থেকে মিলেছে সুইসাইড নোট। এর পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে ২০ হাজার টাকাও। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান তাঁদের অন্ত্যেষ্টিকার্য সম্পন্ন করার জন্যই ২০ হাজার টাকা রাখা হয়েছিল।  

এই প্রসঙ্গে স্থানীয় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিনহা রায় জানান, ঠিক এক মাস আগে গত ২৬ এপ্রিল সুপর্ণা ঘোষের স্বামী স্নেহাংশু ঘোষ মারা যান। তারপর থেকেই শুরু হয় আর্থিক টানাপোড়েন। ধীরে ধীরে মানসিক দিক থেকেও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন মা ও মেয়ে। সেই মানসিক অবসাদের জেরেই তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গিয়েছে, স্নেহা ঘোষ একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতা ছিলেন। তবুও কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। স্বামীকে হারিয়ে কেবল মানসিক অবসাদের জেরেই কি মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সুপর্ণা ঘোষ? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? এই সমস্ত অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ।