বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। আর ২০২১ সালে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই উত্তরোত্তর বেড়েছে পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ। এমন অভিযোগে এবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হতে পারে।
এদিকে, এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। বিরোধী পক্ষ থেকে ক্রমাগত কটাক্ষ করা হচ্ছে। এর জেরেই এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী একেবারে নজিরবিহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত করার জন্য মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে নির্দেশ দিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগেই পারিবারিক সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকে বিরোধীদের জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্য সভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, আমার কত সম্পত্তি? এখানে কেন আমার সম্পত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক কোর্টে মামলা হোক। আমরা ছয় ভাই-বোন। মা যতদিন বেঁচে ছিলেন আমার কাছে থাকতেন। প্রজাদারি জমিতে থাকি আমরা। ৭০ বছর ধরে বাবা থাকতেন। ঠিকা শর্তে রানি রাসমণির জমিতে থাকি আমরা। আমি আর আমার মা থাকতাম। বাকি ভাই-বোনেরা সব নিজেদের আলাদা সংসার, আলাদা বাড়ি। বাকিদের সঙ্গে কেবলমাত্র উৎসবের সম্পর্ক রয়েছে। ১২ বছর ধরে ১ লাখ টাকা করে পেনশন হয়। নিইনি। প্রতি মাসে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পেতাম। এক টাকাও নিইনি। বাইরে গেলে চাও নিজের পয়সায় খাই। সরকারি গাড়ি চড়াও হয় না। ১৯৯১ সালের পর থেকে কোনওদিন এগজিকিউটিভ ক্লাসে চড়িনি। আমি কেন বই বিক্রি করব সেটাও তাঁদের জ্বালা। বাজারে সার্ভে করে দেখুক বইমেলায় বেস্ট সেলার কার বই।’
এরপর বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে ফের এই বিষয়ে মুখ খোলেন। এদিন তিনি বলেন, ‘আমি একটু আউটস্পোকেন। বলা হচ্ছে, সরকারের জমি দখল করে বসে আছি। আমার বাসস্থান রানি রাসমণির সম্পত্তি। আমি সেখানেই ঠিকা প্রজা হিসাবে থাকি। নিজেদের জমি নেই। ভূমি রাজস্ব সচিব, মুখ্যসচিবকে বলেছি তদন্ত করতে। আমার পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত করা হোক। জমি দখল হলে ভেঙে দিতে বলেছি। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিন। কারও অনুমতি নিতে হবে না।’
এর সঙ্গে মমতার আরও সংযোজন, ‘সমাজসেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছি। এরকম নোংরা রাজনীতি দেখলে আগেই রাজনীতি ছেড়ে দিতাম। এরকম নিকৃষ্ট জানলে রাজনীতিতে আসতাম না। ভাবেন স্বার্থের জন্য বসে থাকি? আগেও পদ ছেড়ে দিয়েছি। একদিনের মধ্যে মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমি তো চিরকাল বাঁচব না। তবে জেনে শুনে কোনও অন্যায় করিনি।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসেব চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এই মামলা দায়ের করেন আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। মামলাকারীর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১১ সালে মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ক্রমাগত বেড়েছে পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা কম দামে সরকারি জমি কিনেছে। তাঁরা সকলেই ২০১৩ সালে সেই সম্পত্তি কিনেছে। কোটি কোটি টাকা ট্রাস্টের মাধ্যমে হস্তান্তর হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। এর পাশাপাশি তিনি এই মামলায় সিবিআই, ইডি আয়কর দফতরকে দিয়ে তদন্তের দাবিো জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :