রাজ্যে ক্রমশই উর্ধ্বগামী তাপমাত্রা। গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই বর্তমানে তীব্র গরম এবং তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এই পরিস্থিতিতে এই অবস্থায় স্কুল পড়ুয়াদের সুবিধার্থে বড় ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গরমের হাত থেকে স্কুল পড়ুয়াদের বাঁচাতে আগাম গরমের ছুটির নির্দেশিকা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাধারণত রাজ্যে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে গরমের ছুটি শুরু হয়। কিন্তু প্রবল দাবদাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি ১৫ দিনের মতো এগিয়ে আনা হল। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আগামী ২ মে, সোমবার থেকেই রাজ্যের সমস্ত স্কুলে গরমের ছুটি শুরু হবে। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলিতেও যাতে একই নির্দেশিকা পালন করা হয়, এ জন্য রাজ্য শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে ক`দিন ধরেই আলোচনা চলছিল যে গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হতে পারে। তাপমাত্রার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহে নাজেহাল রাজ্যবাসী৷ ছোট্ট ছোট্ট পড়ুয়াদের হাল আরও খারাপ। দিনে দিনে গরম যে হারে বাড়ছে, তাতে স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেক পড়ুয়াই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই প্রয়োজনে গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হতে পারে বলে মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে জানিয়েও ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
এদিকে বিকাশ ভবনের তরফেও সোমবার রাজ্যে সব স্কুলে `মর্নিং ক্লাস` চালুর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। প্রাথমিক বিভাগ তো বটেই, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলির ক্লাসও যাতে সকালে শুরু করা যায়, তেমন নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল। বিকাশ ভবনের নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছিল, যদি কোনও স্কুল ‘মর্নিং ক্লাস’ চালু করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের গরম থেকে বাঁচাতে স্কুলের তরফে ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা স্বাস্থ্য অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। তবে কবে থেকে সকালের ক্লাস শুরু করবে স্কুলগুলি, তার কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি।
এসবের মাঝে আজ, বুধবার, দুপুরে সমস্ত জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিডিও, এসডিও এবং আইসি-ওসিদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেক বাচ্চাদের গরমে কষ্ট হচ্ছে, স্কুল থেকে ছোটদের ফিরতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তাই গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হোক। ২ মে থেকে গরমের ছুটি শুরুর করার ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় যে, গরমে ছুটি এগিয়ে আনা হবে। বৈঠক শেষেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা করে দেন, আগামী ২ মে থেকেই রাজ্যের সমস্ত স্কুলে শুরু হয়ে যাবে গরমের ছুটি।
আপনার মতামত লিখুন :