শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

কালী নিয়ে মহুয়ার মন্তব্যে বিতর্ক চরমে! সাংসদের মন্তব্যের দায় নিতে অস্বীকার দলের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২, ০১:৩৬ পিএম | আপডেট: জুলাই ৬, ২০২২, ০৭:৫০ পিএম

কালী নিয়ে মহুয়ার মন্তব্যে বিতর্ক চরমে! সাংসদের মন্তব্যের দায় নিতে অস্বীকার দলের
কালী নিয়ে মহুয়ার মন্তব্যে বিতর্ক চরমে! সাংসদের মন্তব্যের দায় নিতে অস্বীকার দলের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘কালী’ ছবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে দলের নিন্দার মুখে আগেই পড়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সম্প্রতি ডকুমেন্ট্রি ফিল্মমেকার লীনা মানিমেকালাইয়ের ‘কালী’ সিনেমার পোস্টার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পোস্টারে মা কালীর বেশে এক মহিলাকে দেখা গিয়েছে। তার হাতে একটি সিগারেট। এই আবহে মঙ্গলবার এক সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে ‘কালী’ সিনেমার পোস্টার বিতর্ক নিয়ে মহুয়াকে প্রশ্ন করা হয়। সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি তথ্যচিত্রটির পরিচালক লীনা মণি মণিমেকলেইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মহুয়া। এরপরই তাঁর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। 

কিন্তু দলের পক্ষ থেকে মহুয়ার মন্তব্যের কড়া নিন্দা করে, স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল যে, দল তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন করে না। এরপরই টুইটারে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল হ্যান্ডলকে আনফলো করেছেন মহুয়া। যদিও, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টুইটারে এখনও ফলো করছেন তিনি।

ঠিক কী বলেছিলেন মহুয়া মৈত্র? মঙ্গলবার সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া। সেখানেই ‘কালী’ তথ্যচিত্রর পোস্টার নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে তিনি বলেন, কালী তাঁর কাছে এমন একজন দেবী, যিনি মাংস খান, মদ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কালী এমন একজন দেবী যিনি মাংস ও মদ খান। আপনার স্বাধীনতা রয়েছে নিজের মতো করে আপনার ঈশ্বরীকে কল্পনা করার। সিকিমে গেলে দেখবেন কালীকে মানুষ হুইস্কি দিচ্ছেন। আবার উত্তরপ্রদেশে আপনি যদি ওই কাজ করতে যান তাহলে আপানার বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিরোধিতার অভিযোগ উঠবে।’  তিনি টুইটেও এই বিষয়ে মন্তব্য করেন। যেখানে তিনি তারাপীঠের উদাহরণ দেন। বলেন যে, তারাপীঠে মাকে ভোগ হিসেবে খাবারের সঙ্গে মদও দেওয়া হয়।

মহুয়ার এই মন্তব্যের পরই বিতর্ক দানা বাঁধে। এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর দল জানিয়ে দেয় যে, তারা মহুয়ার পাশে নেই। মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক টুইটবার্তায় বলা হয়, ‘ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ইস্টে মহুয়া মৈত্র যে মতামত প্রকাশ করেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে তাঁর ব্যক্তিগত মত। দল কোনওরকমভাবে সেই মন্তব্যকে সমর্থন করে না। এরকম মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।’ এই আবহে আজ দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট ফলো করছেন না সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

প্রসঙ্গত, লীনা মণি মেকলেইয়ের ‘কালী’ তথ্যচিত্রর পোস্টার নিয়ে বিতর্ক এই মুহূর্তে চরমে। মা কালীর বেশে এক অভিনেত্রীর হাতে সিগারেট ও পিছনে এলজিবিটিকিউ-এর রেনবো পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে পোস্টারে। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন হিন্দুদের একটা বড় অংশ। 

এদিকে, এই আবহে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। মহুয়ার গ্রেফতারির দাবিও তোলা হয়েছে বঙ্গ বিজেপির তরফে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করে জানিয়েছেন যে, মা কালীকে সনাতন ধর্মে অ্যালকোহল এবং মাংস ভক্ষণকারী দেবীরূপে পুজো করা হয় না। মা কালীকে হিন্দুরা যুগ যুগ ধরে অশুভ শক্তির বিনাশকারী শক্তির প্রতীক রূপে আরাধনা করে আসছে। পাশাপাশি, মহুয়া মৈত্রের মা কালী মন্তব্যের জন্য তাঁর গ্রেফতারির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। 

অন্যদিকে, বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছেন। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, মা কালীকে অপমান করার জন্য মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশকে কখন লুক আউট নোটিস জারি করতে বলবেন? কেন আপনি ও আপনার দলের নেতারা শুধুমাত্র হিন্দু দেবদেবী সম্পর্কেই কুরুচিকর মন্তব্য করেন?’