বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের একবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কুণাল ঘোষ। সম্প্রতি এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে দলের অন্দরে কাদা ছোড়াছুড়ি প্রকাশ্যে এসেছে। নাম না করে তৎকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কুণাল ঘোষ। বিতর্কে জড়িয়েছেন। এবার ফের একবার দলের প্রথম সারির নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হলেন দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শুধু রাজ্যের মন্ত্রীই নন, নাম না করে অনুব্রত মণ্ডলকেও খোঁচা দিয়েছেন। এদিন কুণাল ঘোষ বলেন যে, যিনি একদিন চিটফান্ডের হয়ে গলা তুলেছিলেন, আজ তিনিই রাজ্যের মন্ত্রী। অন্যদিকে, এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডকে কয়েদিদের আশ্রয়খানা বলেও কটাক্ষ করেন।
এদিন অর্থাৎ সোমবার পুরনো একটি মামলায় বিধাননগরের আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন কুণাল ঘোষ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন শুনানি চলাকালীন বিচারকের সামনেই কার্যত ভেঙে পড়েন তিনি। উল্লেখ্য, সারদা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কুণাল। এদিন সেই মামলাতেই আদালতে হাজিরা দিতে হয় কুণাল ঘোষকে।
সূত্রের দাবি, পুরনো দিনের প্রসঙ্গ উঠতেই আদালতের অন্দরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন দলের রাজ্য সম্পাদক। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, জেলে থাকাকালীন তাঁর উপরে কী সাংঘাতিক পরিমাণ অত্যাচার করা হয়েছিল। কুণালের অভিযোগ, জেলে বন্দি থাকাকালীন তিনি দাঁতের যন্ত্রণায় কাতরাতেন। কিন্তু তার পরেও তাঁর চিকিৎসার কোনও বন্দোবস্ত করা হয়নি। অথচ এখন ‘উডবার্ন ওয়ার্ড কয়েদিদের আশ্রয়খানা’য় পরিণত হয়েছে। কুণালের দাবি, তদন্তের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে অনেকেই সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় সিবিআই অফিসে হাজির দিতে গিয়ে সোজা চলে যান হাসপাতালে। এ প্রসঙ্গে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, তদন্তের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই অসুস্থতাকে ঢাল বানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিন কুণালের মন্তব্য থেকেও সেই ইঙ্গিতই মিলেছে।
অন্যদিকে, এদিন একটি চিটফান্ড সংস্থার নাম উল্লেখ করে কুণাল বলেন, ‘আইকোরের মঞ্চে যাকে উঠে বক্তৃতা করতে দেখা গিয়েছে, যিনি আইকোর মডেলকে তুলে ধরেছিলেন, বাইরে থেকে আমায় যিনি পাগল বলেছিলেন তিনি এখন মন্ত্রী। তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঘাড় ধরে জেলে পুরে দেওয়া উচিত।’ এদিকে, কুণালের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এক্ষেত্রে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই কথা বলতে চেয়েছেন তিনি। যদিও কুণাল ঘোষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করেননি।
এদিকে, কুণাল ঘোষের এই ধরনের মন্তব্যে তৃণমূলের ভেতরে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। কুণাল দলের কোনও সাধারণ কর্মী নন, দলের রাজ্য সম্পাদক এবং মুখপাত্র। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এ ধরনের মন্তব্যের প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিগত কয়েকদিন ধরেই এমনটা ঘটে চলেছে। কখনও অনুব্রত মণ্ডল, আবার কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় অথবা ফিরহাদ হাকিম। দলের প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যেন কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন কুণাল ঘোষ।
আপনার মতামত লিখুন :