বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে রাজ্যে প্রায় ২ বছর পর খুলেছে সব স্কুল। মাঝে পরীক্ষা থাকার কারণে সরকারি নির্দেশ থাকলেও, অনেক স্কুল বন্ধ ছিল। এপ্রিলের শুরুতেই ফের স্বাভাবিক নিয়মে পড়ুয়ারা স্কুলমুখী হয়েছে। পড়ুয়ারা ফের স্কুল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যেতে পেরে বেজায় খুশি।
কিন্তু এর মাঝে ফের নতুন এক বিপত্তি। শুরু হয়েছে বেতন বিতর্ক। অনেককেই স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ উঠেছে কলকাতার জিডি বিড়লা স্কুলের বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন অভিভাবকরা। বুধবার আদালত এই সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে আচমকাই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল এই স্কুল।
এদিন সকালে স্কুলের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। স্কুলের মেন দরজায় সেটি সাঁটানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোথা মাথায় রেখে ও পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলের বাইরে যে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে, সেকথার উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
কিন্তু কেন এই বিক্ষোভ? অভিযোগ, গত সোমবার জিডি বিড়লা স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি একাধিক ছাত্রীকে। কমপক্ষে ১০০ জন পড়ুয়াকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্কুলের বকেয়া বেতন মেটানোর পরেও স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ছাত্রীদের। স্কুলের ধার্য করা বেতনই দিতে হবে বলে জানিয়েছে স্কুল। উল্লেখ্য, যে সব অভিভাবকরা স্কুলের ফি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এবং হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ ফি জমা দিয়েছিলেন, সেই সব ছাত্রীদেরই স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। এই জন্যই বিক্ষোভ চলছিল কয়েকদিন ধরে।
সম্প্রতি স্কুলের ফি বিতর্ক নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠে, ৮০ শতাংশের বেশি ফি দেওয়ার পরেও কেন নতুন ক্লাসে তোলা হয়নি? জিডি বিড়লা, মহাদেবী বিড়লা, অ্যাডামাস সহ বেশ কিছু স্কুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। এদিকে, স্কুলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, এই ৮০ শতাংশ নিয়ে সমস্যা। অভিভাবকদের হিসেবে ৮০ শতাংশ, স্কুলের ধার্য করা অঙ্কের থেকে অনেক কম। তবে, কাউকে বের করে দেওয়া হচ্ছে না বলেও দাবি স্কুলের।
এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন যদি কাউকে বের করে দেওয়া হয়নি তাহলে সমস্যা কীসের? উত্তরে আদালত জানায়, সবাইকে নতুন ক্লাসে নিতেই হবে। বৃহস্পতিবার থেকে যাতে স্কুলে যেতে পারে পড়ুয়ারা, সেই নির্দেশ দেন বিচারপতি। বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আদালত এও নির্দেশ দেয় যে, আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। তবে, আদালতের এই নির্দেশের পরেই অভিভাবকরা আবার চেষ্টা করবেন ছাত্রছাত্রিদের স্কুলে ঢোকানর জন্য। সেই সেটা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ এমনটাই অভিযোগ অভিভাবকদের। সার্বিকভাবে স্কুলের এই সিদ্ধান্তের জেরে ব্যহত হল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা।
জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, স্কুলের বাইরে চলা বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই, ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কবে খুলবে ফের স্কুল, তাও জানানো হয়নি। এদিকে, অভিভাবকরা জানিয়েছেন যে, বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। ক্লাস টিচার অথবা কর্তৃপক্ষ কেউই ফোন ধরেননি।
আপনার মতামত লিখুন :