বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে এমনিতেই রাজ্যের শাসকদলের দুই হেভিওয়েট নেতা দুটি পৃথক মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও জেলে পাঠানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এবার সুকান্তর সেই মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাটে মুখ খুললেন খোদ ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘সুকান্ত দা দয়া করে বলে দিন কোন মামলায় আমাকে ফাঁসানো হবে। আমি কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হব।’ তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, দাবি করেছেন, জেলে যেতে তিনি ভয় পান না, কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়ার কারণে সম্মানহানিকে ভয় পান।
ঠিক কী বলেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার? বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের একটি সভায় গিয়ে সুকান্ত মজুমদার প্রকাশ্যে বলেন, ‘তৃণমূলে একজন হাকিম আছে জানেন তো? তাঁকেও প্রস্তুত হতে বলুন। তাঁকেও আমরা ভিতরে ঢোকানোর ব্যবস্থা করব।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদের এই মন্তব্যের পরই বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থার আঁতাতের তত্ত্ব নিয়ে ফের একবার সরব হয়েছে জোড়াফুল শিবির। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, সুকান্তর কথা থেকে এটা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে যে, ইডি, সিবিআই আসলে চলছে বিজেপির সদর দফতরের নির্দেশ মেনে।
এদিন ফিরহাদ হাকিম সুকান্তর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘মনে হচ্ছে সুকান্তবাবুরা তালিকা তৈরি করে দিয়েছে। তাতে কোন মামলায় কাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দিন।’ অতীতে কোনও দিন কোনও অন্যায় কাজ করেননি বলে দাবি করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘তারপরও এত কুৎসা! এত অভিসন্ধি! আমার ওপরে এত রাগ কেন? এর কারণ বুঝতে পারছি না।’ তাঁকে বারবার হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র।
প্রতিক্রিয়ায় ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, ‘আমার জেলে যেতে ভয় লাগে না। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মেছি। সম্মানহানির ভয় লাগে।’ এদিন তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম করেই বলেন, ‘আসুন আমাকে ঢুকিয়ে দিন। শুধু সম্মানহানি করবেন না। মনে রাখবেন, আপনিও কারও সন্তান, কারও স্বামী, কারও বাবা, আমিও তাই।’
এখানেই শেষ নয়, এদিন একই সঙ্গে নারদ মামলার কথাও উল্লেখ করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি উল্লেখ করেন, একটি মামলায় তিনি জেলে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে থাকেননি, আদালতের নির্দেশে জেলেই ছিলেন। তবে, সেটি এই মুহূর্তে বিচারাধীন বিষয় বলে সেই মামলা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ফিরহাদ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন, রাজ্য বিজেপির কথাতেই রাজ্যকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। এবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে বৃহস্পতিবার সুকান্তর করা মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল শিবিরের দাবি, বিজেপিই ঠিক করে দিচ্ছে যে, কাদের কোন মামলায় গ্রেফতার করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :