শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সেদিন ঠিক কী হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমানে? সঠিক তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২২, ০৭:৫১ পিএম | আপডেট: মার্চ ১০, ২০২২, ০৮:২১ পিএম

সেদিন ঠিক কী হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমানে? সঠিক তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে
সেদিন ঠিক কী হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমানে? সঠিক তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গত ৪ মার্চ উত্তরপ্রদশের বারাণসী থেকে ফেরার পথে বিমান বিভ্রাটের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান। সেই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত চেয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা হল জনস্বার্থ মামলা। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।

মামলাকারী বিপ্লব চৌধুরীর বক্তব্য, ২০১৬ সালেও এইভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমানে বিভ্রাট হয়েছিল। পরে এনিয়ে অভিযোগও দায়ের করা হয়। কিন্তু সেই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হয়নি বলেই দাবি করেছেন মামলাকারীর দাবি। সেই কারণেই এবার তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি আবেদনে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করুক হাইকোর্ট। তাঁর আরও বক্তব্য, যেহেতু এই ঘটনা পরপর দু’বার ঘটল, তাই এর নেপথ্যে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হোক।  

উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল বলছে সেখানে ক্ষমতা ধরে রেখেছে বিজেপি। আজই ফল ঘোষণা হয়েছে। বিপুল আসনে জিতে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে পদ্মশিবির। এর আগে যেদিন রাজ্যে পুরসভার ফল ঘোষণা হয়েছিল, সেদিনই উত্তরপ্রদেশে সপা প্রধান অখিলেশ যাদবের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে বারাণসী গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ৪ মার্চ বারাণসী থেকে ফেরার পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান বিভ্রাট ঘটে। যে উচ্চতায় বিমান ওড়ার কথা ছিল, তা থেকে বেশ খানিকটা নেমে আসে তা। এর জেরে মাঝ আকাশে কাঁপতে শুরু করে বিমানটি। যদিও পাইলটের দক্ষতায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে, বিমানের ভিতরে ঝাঁকুনি অনুভব করেন যাত্রীরা। ৪ তারিখ বেলা ৩টে ১০ মিনিট নাগাদ যখন বিমানটি কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করছিল তখন ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গিয়েছিল। 

অন্যদিকে, পরিষ্কার আকাশে কেন এমন বিমান-বিভ্রাট? মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে দাবি করেছিলেন যে, তাঁর বিমান সেদিন কোনও এয়ার পকেটে পড়েনি। তিনি বলেন, ‘অন্য একটি বিমান সামনে চলে আসে। আর ১০ সেকেন্ড হলেই মুখোমুখি সংঘর্ষ হত। পাইলটের জয় বেঁচে গিয়েছি। ৮০০০ ফিট নেমে আসে বিমান। পিঠে আর বুকে চোট লাগে।’ তাঁর এই বক্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের বিষয়টি।

প্রশ্ন ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান কোন রুটে আসবে তা তো আগে থেকেই জানা ছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের। তা হলে, কেন যাত্রাপথ ফাঁকা রাখা হয়নি কেন? এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাজকর্মে কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, সেই বিষয়েও প্রশ্ন ওঠে। তৃণমূল ইউনিয়নের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয় যে, মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ বিমান ওই রুট ধরেই আসবে, সেকথা তো আগে থেকেই জানত এটিসি। কাজেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল, ওই নির্দিষ্ট সময়ে রুট ক্লিয়ার রাখা এবং এই রুটের যথাযথ আপডেট দেওয়া। এখানেই শেষ নয়, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সচেতনতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভিকে চিঠিও দেওয়া হয়। এরপর কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে কলকাতা বিমানবন্দরকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবার এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল।