বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আরজি। এদিন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেয়। এই রায়ের পর আপাতত জেলেই থাকতে হবে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির পর রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। আজ সেই মামলার রায়ে অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল। অনুব্রত অনুব্রত মণ্ডল দুটি আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার মধ্যে প্রথমটি ছিল সিবিআই- এর করা মামলায় জামিন সংক্রান্ত আবেদন। আর দ্বিতীয়টি হল, ইডির এফআইআর খারিজের আবেদন। এর মধ্যে দ্বিতীয় আবেদন ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। আর মঙ্গলবার জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার উভয়পক্ষে আইনজীবীদের বক্তব্য শোনে ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু রায়দান স্থগিত রেখেছিল। আজ সেই রায়ে কেষ্টর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল।
গত ১১ আগস্ট বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। মোট ১৪৬ দিন ধরে জেলবন্দি এই তৃণমূল নেতা। সম্প্রতি এই মামলায় জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের গিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রতর হয়ে সওয়াল করেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল।
তিনি জানান, এই মামলায় ৯৫ জনকে সাক্ষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৩৩ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিবিআইকে সিব্বলের প্রশ্ন, ‘বাকিদের সাক্ষ্য কবে নেওয়া হবে?’ মক্কেলের জামিনের পক্ষে সওয়াল করে উল্লেখ করেন বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার-সহ অন্য অভিযুক্তদের কথা। তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেও অনুব্রত কেন জামিন পাচ্ছেন না, প্রশ্ন তোলেন কপিল সিব্বল।
এই একই প্রশ্ন তোলা হয় মঙ্গলবার বিচারপতিদের তরফেও। এর আগে একাধিকবার সিবিআই-এর পক্ষ থেকে অনুব্রতকে প্রভাবশালী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এদিনও ফের সেই একই তত্ত্বকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এমনকি বীরভূমের এই দাপুটে নেতাকে ‘পলিটিক্যাল জায়েন্ট’ বা ‘রাজনৈতিক দৈত্য’ বলেও মন্তব্য করে সিবিআই। এরপরই মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রশ্ন করে যে, ‘মূল অভিযুক্ত বিএসএফ- এর সতীশ কুমারকে ছেড়ে দিলেন। আর অনুব্রতকে কি রাজনৈতিক কারণে ছাড়ছেন না?’
যার জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী ডি পি সিং ফের একবার প্রভাবশালী তত্ত্ব তুলে ধরেন। ‘এনামুল গরুপাচার কাণ্ডের অন্যতম কাণ্ডারি ছিল। যার সঙ্গে ষড়যন্ত্র গরু পাচার করত অনুব্রত মণ্ডল। রহিম তার বয়ানে জানিয়েছে অনুব্রতর কাছ থেকে একাধিকবার টাকা নিয়ে তার ভাইকে দিয়েছে। জেল থেকে ফোনে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ৩৯ বার কথা হয়েছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, বীরভূমের সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হত। সেই পুরো প্রক্রিয়া সহজ করে দিতেন খোদ জেলা সভাপতি অনুব্রত।
মঙ্গলবারের পর এদিন ফের সেই প্রভাবশালী তকমাই কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় অনুব্রতর জামিনে। আর তার জন্যই এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
আপনার মতামত লিখুন :