শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরতে চাইছেন না এই ভারতীয় চিকিৎসক! কিন্তু কেন?

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২২, ০৮:৫৮ পিএম | আপডেট: মার্চ ৭, ২০২২, ০৯:২৮ পিএম

ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরতে চাইছেন না এই ভারতীয় চিকিৎসক! কিন্তু কেন?
ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরতে চাইছেন না এই ভারতীয় চিকিৎসক! কিন্তু কেন?

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১১ দিন ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। রুশ বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত সমগ্র ইউক্রেন। এইভাবে আরও বেশ কিছুদিন চলতে থাকলে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হতে ইউক্রেনের বেশি সময় লাগবে না। অন্যদিকে ইউক্রেনে বসবাসকারী ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর কাজ করছে ভারত সরকারের ‘অপারেশন গঙ্গা‍‍` প্রকল্প। ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার ভারতীয়-কে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এখনও বেশ কিছু ভারতীয় আটকে রয়েছেন ইউক্রেনে। রাশিয়ার সামরিক হামলায় ইতিমধ্যেই প্রাণ খুইয়েছেন ২ ভারতীয়। তাই এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজেকে নিরাপদে বাঁচিয়ে দেশে ফিরতে আতঙ্কিত হচ্ছেন অনেকেই। এনাদের মধ্যে রয়েছেন এক চিকিৎসকও।

ইউক্রেনে বসবাসকারী এই ভারতীয় চিকিৎসকের নাম ডাঃ গিরিকুমার পাটিল। ইউক্রেন থেকে ভারতে না ফেরার পেছনে তাঁর অন্য একটি কারণ আছে। তাঁর প্রিয় দুই পোষ্য, একটি চিতাবাঘ ও একটি ব্ল্যাক প্যান্থার-কে ছেড়ে নিজের দেশে ফিরতে নারাজ তিনি। দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (The New Indian Express)-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমার পোষ্যদের ছেড়ে কখনই যাব না। যদিও আমার পরিবার আমাকে ফিরে যেতে বারবার অনুরোধ করছে। আমার পোষ্যরা আমার সন্তানের মত। আমার শেষ নিশ্বাস অবধি আমি ওদের সঙ্গে থাকব এবং ওদের রক্ষা করব”।

২০০৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের তনুকা অঞ্চলের বাসিন্দা ডাঃ পাটিল ডাক্তারি পড়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর ইউক্রেনে। পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি ইউক্রেনের ডনবাসে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি অর্থোপেডিকস (Orthopaedic) বা হাড়ের চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন একটি স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে। এরপর স্থানীয় চিড়িয়াখানায় অসুস্থ অবস্থায় থাকা একটি চিতাবাঘ-কে তিনি উদ্ধার করেন এবং চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে চিতাবাঘটিকে দত্তকও নেন। তার নাম রাখেন ইয়াশা (Yasha)। এরপর দুই মাস আগে ইয়াশার সঙ্গী হিসেবে একটি মহিলা ব্ল্যাক প্যান্থার-কে নিয়ে আসেন তিনি। প্যানথারটির নাম সাবরিনা (Sabrina)। পুরুষ জাগুয়ারটির বয়স ২০ মাস এবং মহিলা ব্ল্যাক প্যান্থারটির বয়স মাত্র ৬ মাস।

বিবিসি (BBC) সূত্রে খবর, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ডাঃ পাটিল তাঁর দুই পোষ্যকে নিয়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। একমাত্র খাবার কিনতেই তিনি বাঙ্কারের বাইরে বের হচ্ছেন। বিবিসি-কে তিনি জানিয়েছেন, এই ভয়ংকর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাঁর পোষ্যগুলি তাঁর সঙ্গেই বাঙ্কারে রাত কাটাচ্ছে। চারিপাশে ক্রমাগত গোলাবর্ষণে অত্যন্ত ভয় পেয়েছে তারা। এমনকি খাওয়া দাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় কোনভাবেই তাদেরকে ছেড়ে যেতে পারবেন না তিনি।

জাগুয়ার ও ব্ল্যাক প্যান্থার ছাড়াও ডাঃ পাটিলের আরও তিনটি কুকুর আছে। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে পোষ্য কুকুরগুলির জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁর এই ইউটিউব চ্যানেলটিতে প্রায় ৮৪,০০০-এরও বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। ডাঃ পাটিল আশা রাখছেন যে ভারত সরকার তাঁর পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরে আসার অনুমতি দেবে। তার আগে পোষ্যদের ছেড়ে কোনভাবেই দেশে ফিরবেন না ডাঃ পাটিল।