বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই ভেঙে ফেলা হবে নয়ডার সুপারটেক টুইন টাওয়ার। নয়ডায় অবস্থিত এই টুইন টাওয়ার ৪০ তলা বিশিষ্ট। আজই বিশেষ বিস্ফোরকের সাহায্যে ভেঙে ফেলা হবে এই যমজ টাওয়ার।
উল্লেখ্য আইন অমান্য করে ২০১৩ সালে এই টুইন টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল প্রস্তুতকারী সংস্থা। অভিযোগ, এই টাওয়ার নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হলেও, সেই বাধা ধোপে টেকেনি। এই টাওয়ার নির্মাণে বাধা দিতে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছিল স্থানীয়দের তরফে। তাতেও কিছু হয়নি। এরপর কার্যত বাধ্য হয়েই স্থানীয় এমারেল্ড কোর্ট সোসাইটির বাসিন্দারা দ্বারস্থ হন সুপ্রিম কোর্টের।
এরপর শুরু হয়, আইনি লড়াই। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর, শীর্ষ আদালতের রায়ে আজই দুপুর আড়াইটে নাগাদ ভেঙে ফেলা হবে বেআইনিভাবে নির্মিত নয়ডার এই টুইন টাওয়ার। এই জোড়া বহুতলের একটি নাম অ্যাপেক্স। এর উচ্চতা ১০০ মিটার। অন্যটির নাম সিয়ানে। যার উচ্চতা ৯৭ মিটার। উল্লেখ্য, এই জোড়া টাওয়ার দিল্লির কুতুব মিনারের থেকেও লম্বা।
জানা গিয়েছে, এই টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জন্য ৩ হাজার ৭০০ গ্রাম বিস্ফোরক ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই তা বসানো হয়ে গেছে যথাস্থানে। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধোঁয়াশা বন্দুক, ১০০টিরও বেশি জলের ট্যাঙ্ক, আর কর্মীদের জন্য ৬টি যান্ত্রিক সুইপিং মেশিন আনা হয়েছে। ১৫০ সাফাই কর্মী আজ একসঙ্গে কাজ করবেন। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কারণে ৫৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। যা সরাতে প্রায় তিন মাস সময় লাগবে। এদিকে, এই কাজের জন্য এমেরাল্ড কোর্টের প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দা এবং সেক্টর 93A এর পার্শ্ববর্তী এটিএস ভিলেজ সোসাইটিগুলিকে আজ সকাল ৭ টার মধ্যে তাদের জায়গা খালি করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে যে, এই সুপারটেক টুইন টাওয়ার ভাঙতে মাত্র ৯ সেকেন্ড সময় লাগতে পারে। সেই টাওয়ার ভাঙার সময় ধুলোয় ঢেকে যেতে পারে গোটা এলাকা। এই কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও ২৬ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, টুইন টাওয়ারের পাশের সবচেয়ে কাছের বিল্ডিংগুলি হল এমারল্ড কোর্ট সোসাইটির Aster 2 এবং Aster 3 যা মাত্র নয় মিটার দূরে। এই ভবনগুলির যাতে কোনও কাঠামোগত ক্ষতি না হয়, এই টুইন টাওয়ার ভাঙার সময়, সেজন্য এমনভাবে বিস্ফোরক দিয়ে ভেঙে ফেলা হবে।
অন্যদিকে, ধ্বংসাবসের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের আজ ২টো ৩০ থেকে মাস্ক পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত বা যারা এই ধরনের অসুখে ভুগছেন, এমন ব্যক্তিদের জন্য পরামর্শও জারি করা হয়েছে। শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন এমন স্থানীয় বাসিন্দারা যারা ধ্বংসের স্থানের কাছাকাছি বাস করছেন, তাঁদের রবিবার দুপুর থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য মুখোশ পরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যখন বিস্ফোরণ ঘটবে।
আপনার মতামত লিখুন :