বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ, সোমবার দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনই এনডিএ-এর উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন জগদীপ ধনখড়। শনিবারই গেরুয়া শিবিরের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পর দেশের বড় চমক দেয় মোদী-শাহরা। সবাইকে চমকে দিয়ে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে।
এরপর এদিনই উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন জগদীপ ধনখড়। আজ মনোনয়ন পেশের সময় ধনখড়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী।
এনডিএ-এর উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরই বাংলার রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। এদিকে, বিরোধী শিবির থেকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা হয়েছে কংগ্রেস নেত্রী মার্গারেট আলভাকে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী জগদীপ ধনখড়ের মুখোমুখি হবেন তিনি। রবিবার এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের বাড়িতে বৈঠকে বসেন ১৭ টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। সেখানেই উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসেবে মার্গারেট আলভার নাম বাছাই করা হয়।
এদিন সংসদ ভবনে মনোনয়ন পেশের পর, বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জগদীপ ধনখড় নিজের ‘কৃষকপুত্র’ ভাবমূর্তির উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘কৃষকের ঘরে আমি জন্মেছিলাম। বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় ৬ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতাম। স্কলারশিপ পেয়ে পড়াশোনা শেষ করেছি। সেই কৃষকপুত্রই আজ মনোনয়ন জনা দিয়ে এসেছে, যা ভারতীয় রাজনীতিতে নজির তৈরি করেছে। আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-সহ অন্যান্য নেতৃত্বের কাছে কৃতজ্ঞ। ভারতীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করব। আমি কল্পনাও করতে পারিনি যে এক সাধারণ ব্যক্তিকে সুযোগ দেওয়া হবে।’
শনিবার এনডিএ পদপ্রার্থী হিসেবে ধনখড়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পরই, বিরোধী শিবির থেকে রবিবার কংগ্রেস নেত্রী মার্গারেট আলভাড় নাম উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। রবিবার শরদ পাওয়ারের বাসভবনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, এনসিপি প্রধান মার্গারেট আলভার নাম ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, এই ব্যাপারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তাঁর থেকে সবুজ সংকেত মিলতেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন এখন বিরোধীরা। এদিন শরদ পাওয়ারের বাড়িতে মোট ১৭ টি বিরোধী দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁদের ফোন করা হয়। এমনটাই জানিয়েছেন এনসিপি প্রধান।
উল্লেখ্য, মার্গারেট আলভা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেত্রী। মার্গারেট একাধিকবার রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন। ১৯৯৯ সালে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, এই পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক কর্মকালে গোয়া, গুজরাত, রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপালও ছিলেন।
এদিকে, আগামী ৬ আগস্ট উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ সাংবিধানিক পদে কাজ করার পাশাপাশি উপরাষ্ট্রপতিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করতে হয়। দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সকল সাংসদ, বিধায়করা ভোট দিলেও, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শুধুমাত্র লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেবেন। আর সংখ্যার নিরিখে বিচার করলে, বিরোধীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিজেপির একাই রয়েছে ৩৪৯ জন সাংসদ রয়েছে। কাজেই মনে করা হচ্ছে যে, ধনখড়ের জয় শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
আপনার মতামত লিখুন :