আদতে সে আস্ত এক কুমির। নাম তার `বাবিয়া`। কিন্তু কুমির হলেও অন্য কুমিরের থেকে এক্কেবারে আলাদা ছিল সে। কারণ, মাছ-মাংস একেবারেই ছুঁয়ে দেখত না সে। বরং পেটপুরে খেত ভাত-শাকসবজি৷ তবে সদ্য মারা গেলে নিরামিষাশী এই কুমির।
রবিবার কুমিরটির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে কেরালার কাসারগড় এলাকার শ্রী আনন্দপদ্মনাভ মন্দিরে। কেরালার কাসারগড় জেলার অনন্তপুরা গ্রামের ওই মন্দিরটি বিখ্যাত ছিল কুমিরটির জন্য। কুমিরটিকে দেখতে মন্দির চত্বরে ভিড় জমাতেন বহু মানুষ। কুমিরটিকে ‘ঈশ্বরের দূত’ বলে মানতেন স্থানীয়রা।
অবশেষে ৭৫ বছর বয়সে মারা গেল কুমিরটি।তার মৃত্যুর পর মৃতদেহটি রাখা হয়েছে মন্দিরের কম্পাউন্ডেই, যাতে সাধারণ মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারে। জানা গিয়েছে, মন্দির চত্বরেই বাবিয়া নামক কুমিরটিকে সমাহিত করা হবে। বাবিয়ার শোকে মন্দিরের দরজাও বন্ধ রাখা হয়েছিল।
নিরামিষ আহারই করত কুমিরটি। মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে কুমিরটির বন্ধন গাঢ় ছিল। দিনে দু’বার কুমিরটিকে খাওয়াতেন পুরোহিতরা। ভাতও খাওয়ানো হত কুমিরটিকে। কবে নাগাদ ওই কুমিরটি মন্দির চত্বরের পুকুরে এসেছিল, বা কে নামকরণ করেছিল তার, সে বিষয়ে কেউই জানেন না।
স্থানীয়দের মতে, ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই মন্দিরে বাস করছিল কুমিরটি। কুমির মাত্রেই হিংস্র হয়। কিন্তু বাবিয়া ছিল একেবারে আলাদা। তার শান্ত স্বভাব আলাদা করে নজর কাড়ত। কখনও কাউকে আক্রমণ করেনি সে। আর এ জন্যই তাকে ঘিরে বাড়তি আকর্ষণ তৈরি হয়েছিল।
কুমির বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরীর মতে, ‘‘বিষয়টি কিছুটা হলেও অস্বাভাবিক। যে কুমিরটিকে নিরামিষাশী বলে বর্ণনা করা হচ্ছে, সেটি আসলে মিষ্টি জলের কুমির (মগর)। মাছ এদের স্বাভাবিক খাদ্য। তবে হরিণ, বন্য শূকরের মতো প্রাণীর মাংসও খায় এরা।’’
আপনার মতামত লিখুন :