রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

প্রায় তিন দশক পরে কংগ্রেসে অ-গান্ধী সভাপতি পদে, থারুর বনাম গেহলট! কে জিতবে?

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৫:২৬ পিএম | আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ১১:৪৩ পিএম

প্রায় তিন দশক পরে কংগ্রেসে অ-গান্ধী সভাপতি পদে, থারুর বনাম গেহলট! কে জিতবে?
প্রায় তিন দশক পরে কংগ্রেসে অ-গান্ধী সভাপতি পদে, থারুর বনাম গেহলট! কে জিতবে?

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রায় তিন দশক পরে কংগ্রেসে কোনও অ-গান্ধীকে সভাপতি পেতে চলেছে কংগ্রেস। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য এবার সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। যদিও, শেষ মুহূর্তে রাহুল গান্ধীকে সভাপতি পদে চেয়ে সাতটি প্রদেশ কমিটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইতিমধ্যেই। তবে, তাতেও রাহুলের মত পরিবর্তনের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। কাজেই এটা কার্যত স্পষ্ট যে, সভাপতি পদের জন্য লড়াই হতে চলেছে অ-গান্ধীদের মধ্যেই।

এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের অন্দরের যা পরিস্থিতি, তাতে এবারে সভাপতি পদের জন্য সরাসরি লড়াই হতে চলেছে শশী থারুর এবং অশোক গেহলটের মধ্যে। ১৭ অক্টোবর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। শনিবার শুরু মনোনয়ন পেশ। তাতে শশী থারুরের মনোনয়ন পেশের বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত। সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে থারুর নিজেই সেই জল্পনা আরও উসকে দিয়েছেন। দলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। থারুরের মতে, সুস্থভাবে ভোট হলে, তাতে কংগ্রেসই শক্তিশালী হবে।

এদিকে, থারুর সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে এটা নিশ্চিত হলেও, গেহলটের প্রার্থী হওয়াটা এখনও নিশ্চিত নয়। গান্ধী পরিবার এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠরা চাইছেন, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রার্থী করতে। তবে, অশোক গেহলট নিজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রিত্বের রাজপাট ছেড়ে কংগ্রেসের সভাপতি হতে রাজি নন। আবার সোনিয়া গান্ধীর যদি নির্দেশ আসে, সেটা উপেক্ষা করাটাও সহজ হবে না গেহলটের জন্য।

সেক্ষেত্রে গেহলট যদি প্রার্থী হন, তাহলে প্রায় সাড়ে ৩ দশক বাদে কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য লড়বেন অ-গান্ধী দুই কংগ্রেস নেতা। এই দুই জনের মধ্যে গেহলট গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসাবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন। আর শশী থারুর নামবেন বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি হিসাবে। যদিও আজকাল থারুর গান্ধী পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। তিনি ইতিমধ্যেই রাহুলের নেতৃত্বে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রার পা মিলিয়েছেন। আবার সোনিয়ার সঙ্গেও দেখা করেছেন। সব নেতাই জানেন যে, গান্ধী পরিবারের সমর্থন ছাড়া কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে জয় কার্যত অসম্ভব। সেদিক থেকে বিচার করলে, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পাল্লাই ভারী। কারণ, গান্ধী পরিবারের সমর্থন রয়েছে তাঁর দিকেই।

আরও কিছু কারণ আছে, গেহলটের পাল্লা ভারী হওয়ার নেপথ্যে। গেহলট প্রবীণ নেতা। বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ আছে তাঁর। সেটাও তাঁর পক্ষে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি একাধিকবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী থাকার অভিজ্ঞতাও তাঁকে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, স্পষ্ট ও পরিষ্কার বাচনভঙ্গী, এবং জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিতির ভিত্তিতে তিনি কিছুটা এগিয়ে থাকবেন গেহলটের থেকে। কংগ্রেসের অন্দরে যে বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, থারুর আবার তাঁদের প্রতিনিধিও। কিন্তু শশী থারুরের বিপক্ষে যাচ্ছে, কংগ্রেসের মধ্যে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ভেঙে যাওয়ার ঘটনা। এই গোষ্ঠীর নেতাদের অনেকেই এই মুহূর্তে হয় দল ছেড়েছেন, নাহয় মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। তাই সেদিক থেকে বিচার করলে, গেলে থারুরের পিছনে সেভাবে শক্তিশালী কোনও গোষ্ঠীর সমর্থন নেই। কাজেই সভাপতি নির্বাচনে জিততে হলে, শশী থারুরকে গান্ধী পরিবারের আস্থা অর্জন করতেই হবে।