শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ! মোদী জামানায় রেকর্ড ভাঙল সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম | আপডেট: জুন ১৭, ২০২২, ০৯:৩৪ পিএম

১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ! মোদী জামানায় রেকর্ড ভাঙল সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ
১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ! মোদী জামানায় রেকর্ড ভাঙল সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার আগে নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, কেন্দ্রের ক্ষমতায় এলে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফেরত আনবেন। ২০১৪ সালে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী কালো টাকার বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টো চিত্রটাই সামনে আসছে।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরানো তো দূর, উল্টে কালো টাকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা সেই নরেন্দ্র মোদীর জামানাতেই সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ। মাত্র এক বছরের মধ্যে সেই জমানো টাকার পরিমাণ প্রায় দেড়গুণ হয়েছে। বার্ষিক হিসেব অনুযায়ী, ২০২১ সালে শুধুমাত্র ভারতীয়দের জমানো আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যা বিগত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলেই জানা যাচ্ছে। 

২০১৮ সালের শেষের দিকে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমানো টাকার অঙ্ক ছিল ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। যা পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালে একধাক্কায় অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু ২০২০ সালে ফের একধাক্কায় এই আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এরপর ২০২১ সালে, করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতেও সেই টাকার অঙ্কটা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এই মুহূর্তে এই টাকার পরিমাণ ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

প্রসঙ্গত, বলা হচ্ছে এটা সরকারি হিসেব। কিন্তু এর বাইরেও ডামি অ্যাকাউন্ট বা ডামি সংস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে বহু ভারতীয় সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রাখেন। আবার এঁদের বাইরে প্রবাসী ভারতীয়রা বৈধ ভাবেও সেখানে টাকা গচ্ছিত রাখেন। কাজেই এভাবে কালো টাকার হিসেবে জানা কার্যত অসম্ভব। তবে, সুইস ব্যাঙ্কে কোন কোন ভারতীয়র অ্যাকাউন্ট আছে, কারা কারা কত পরিমাণ অর্থ জমা রেখেছেন, সেই হিসেব আগেই কেন্দ্রের মোদী সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, বিশ্বের মোট ৮৬টি দেশের নাগরিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সেই দেশের সরকারকে তথ্য জানায় সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কোন কোন দেশের নাগরিক ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, সে সম্পর্কে তথ্য দেয় সুইজারল্যান্ড ফেডারেল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সেই দেশের তালিকায় ভারতও রয়েছে।

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উদ্দেশে সুইস ব্যাঙ্কে জমানো কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি নিজে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় এলে সুইস ব্যাঙ্কে জমা কালো টাকা দেশে ফেরত আনা হবে। তবে, কথা দিলেও, সেই অনুযায়ী কাজ হয়নি। জমানো কালো ফেরত আনা হয়নি। উল্টে ফান্ড, বন্ড, ডিবেঞ্চারের পাশাপাশি ভারতীয় অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়েছে আরও আরও টাকা।