রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

ভাগ্য ফেরাতে ভয়ঙ্কর কায়দায় ‘নরবলি’! দুই মহিলাকে খুন করে দেহাংশ মাটিতে পুঁতল দম্পতি

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২২, ০৭:৪৮ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২২, ০১:৪৮ এএম

ভাগ্য ফেরাতে ভয়ঙ্কর কায়দায় ‘নরবলি’! দুই মহিলাকে খুন করে দেহাংশ মাটিতে পুঁতল দম্পতি
ভাগ্য ফেরাতে ভয়ঙ্কর কায়দায় ‘নরবলি’! দুই মহিলাকে খুন করে দেহাংশ মাটিতে পুঁতল দম্পতি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ নরবলি দিলে নাকি আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে, সেই সঙ্গে সুদিনও ফিরে আসবে। এই অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে দুই মহিলাকে খুনের অভিযোগ উঠল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণের রাজ্য কেরলে। এদিন এই ঘটনার কথা জানিয়েছে পুলিশ। ব্ল্যাক ম্যাজিকের বশবর্তী হয়েই অভিযুক্ত দম্পতি এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলেই জানিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, খুন হওয়া দুই মহিলার বয়সই ৫০ বছরের কাছাকাছি। 

পরিবারে দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক সমস্যা চলছিল। যা থেকে মুক্তি পেতে চাইছিলেন ওই দম্পতি। ওই দম্পতি আবার তন্ত্রমন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতেই এই কাণ্ড ঘটান ওই দম্পতি। জানা গিয়েছে, ওই দুই মহিলাকে প্রথমে অপহরণ করে, তাঁদের হত্যার পর দেহ টুকরো টুকরো করে পুঁতে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ওই দম্পতি-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে, এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পাঠানমথিট্ট জেলার থিরুভাল্লা এলাকায়।

পুলিশ জানিয়েছে মৃত দুই মহিলার নাম রোজেলিন এবং পদ্মা। কেরলের এর্নাকুলাম এলাকায় বাড়ি তাঁদের। তাঁরা দুজনেই লটারির টিকিট বিক্রি করতেন বলেই জানা গিয়েছে। আলাদা আলাদা সময়ে ওই দুই মহিলা নিখোঁজ হয়ে যান। জুন মাসে নিখোঁজ হয়েছিলেন রোজেলিন। আর সেপ্টেম্বরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন পদ্মা। এরপর উভয়ের পরিবারই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন।

এদিকে, নরবলি দিলে আর্থিক সমৃদ্ধি আসবে সংসারে এমনটা আশ্বাস দিয়েছিলেন এই ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্ত মহম্মদ শফি। জানা গিয়েছে, এই শফিই এর্নাকুলামেরই বাসিন্দা দুই মহিলা রোজেলিন ও পদ্মাকে অপরহরণ করে। এরপর তাঁদের খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে পাঠানমথিট্ট জেলার থিরুভাল্লা এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে পুঁতে দেওয়া হয়। পুলিশ ইতিমধ্যেই সেইসব দেহাংশ উদ্ধার করেছে।

জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দম্পতি থিরুভাল্লার বাসিন্দা। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ভগবন্ত সিং। তিনি মাসাজ থেরাপিস্টের কাজ করেন। আর তাঁর স্ত্রীর নাম লাইলা। পুলিশ জানিয়েছে, এই দম্পতি বিশ্বাস করতেন, এই নরবলি তাঁদের সব সমস্যা দূর করবে। প্রচুর অর্থ আসবে সংসারে। আর সেই বিশ্বাস এবং অন্য অভিযুক্ত শফির একই আশ্বাস থেকেই এই খুন।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোচির পুলিশ কমিশনার নাগারাজু চাকিলাম বলেছেন যে, ‘ঘটনার তদন্তে দেখা গিয়েছে নিখোঁজ মহিলাদের অপহরণ করে দম্পতির বাড়িতে আনা হয়েছিল। থিরুভাল্লায় মহিলাদের দেহ টুকরো করে কেটে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। এই দম্পতি স্বীকার করেছেন, এই খুন করে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। সে জন্যই এই কাজ করেছেন।’ অন্যদিকে, তিনি এও জানিয়েছেন যে, এই ঘটনার পিছনে এখনও অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। তাঁর মতে, তদন্ত যত এগোবে, ততোই স্পষ্ট হবে, এই খুনের পিছনে আরও অন্য কোনও কারণ আছে কিনা এবং এই ঘটনায় আরও কেই যুক্ত আছেন কিনা।