বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তবে কি এবার দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ দুয়ারে? নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত তেমনই ইশারা করছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ক্রমশ কমতে শুরু করেছিল আক্রান্তের সংখ্যা। লকডাউন, কড়া বিধিনিষেধ, টিকাকরণে জোরের মধ্যে দিয়ে আবার ধীরে ধীরে সুস্থতার পথেই এগোচ্ছিল ভারত। গত দুই সপ্তাহ ধরেই দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। বিগত এক সপ্তাহ ধরে দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজারের উপরে রয়েছে। আর সংক্রমণ লাগাতার বাড়ার কারণেই করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি ও সংক্রমণ রুখতে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে আজ রাজ্যের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, টিকাকরণের উপর আরও বেশি করে জোর দিতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাকরণই একমাত্র উপায়। তাই আগামীদিনে টিকাকরণ এবং বুস্টার ডোজের উপর আরও জোর দিতে হবে। এর পাশাপাশি শিশুদের জন্য স্কুলে স্কুলে বিশেষ টিকাকরণ অভিযানও চালানো হবে।
করোনার আরও এক নয়া প্রজাতি XE ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলার খবরের মাঝেই ফের দেশে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের করোনা গ্রাফে ওঠানামা অব্যাহত রয়েছে। কয়েকদিন ধরে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। দিল্লিতে যেভাবে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ তা যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রককে। দ্রুত পজিটিভিটি রেট বেড়ে চলেছে। যা আশঙ্কাজনক বলেই মানছে বিশেষজ্ঞ মহল। শুধু দিল্লিই নয়, এই তালিকায় আরও কয়েকটি রাজ্য বর্তমান। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গতকালের থেকে ফের অনেকটাই বাড়ল। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩০৩ জন। গতকাল দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯২৭ জন। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। মৃতের সংখ্যাও গতকালের থেকে সামান্য বেশি। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা মোট মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৯৩ জন।
এতদিন সরকারকে সবচেয়ে স্বস্তি দিচ্ছিল যেটা, সেটা হল অ্যাকটিভ কেস। পরপর বেশ কিছু সময় ধরেই কমছিল দেশের চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা। কিন্তু গত কিছু সময় ধরেই তা বাড়ছে। ফের গত ২৪ ঘণ্টায় বাড়ল অ্যাকটিভ কেস। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৯৮০ জন। গতকাল দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ২৭৯ জন। আপাতত অ্যাকটিভ কেসের হার দাঁড়িয়েছে ০.০৪ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৬৩ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনাকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৪ কোটি ২৫ লক্ষ ২৮ হাজার ১২৬ জন।
করোনার মোকাবিলায় এখনও চলছে টিকাকরণ। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত দেশে ১৮৮ কোটি ৪০ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৫৩ জনের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার কাজ চলছে পাশাপাশি চলছে দেশের প্রবীণ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজও। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ১২-১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ কর্মসূচি। ষাটোর্ধ্বদের জন্য ‘প্রিকশন ডোজ’ অর্থাৎ বুস্টার ডোজে ছাড়পত্র দিয়েছে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এদিক, রাজধানী দিল্লি এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় পজিটিভিটি রেট বাড়তে থাকায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে।
আপনার মতামত লিখুন :