বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০১৪ এবং ২০১৯ এই পরপর দুই লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। তাই এবার আসন্ন ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ফের ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে হাত শিবির। আর সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য নয়া কর্মসূচি নিয়েছে দল। সেক্ষেত্রে প্রথমেই মজবুত করতে হবে জনসংযোগ। আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে।
আর এই জনসংযোগ মজবুত করতে ময়দানে ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা গান্ধী পরিবারের সদস্য রাহুল গান্ধী। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-য় অংশ নিয়ে তিনি পৌঁছে যাচ্ছেন বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের কাছে। গত বুধবার সন্ধে থেকেই শুরু হয়েছে কংগ্রেসের এই বিশেষ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার থেকেই হাঁটা শুরু করেছেন রাহুল গান্ধী। দেড়শো দিনে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি রাস্তা তিনি হাঁটবেন। আর এই দীর্ঘ পথযাত্রার শুরুতেই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি পেলেন বিয়ের প্রস্তাব!
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের প্রচার বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশ একটি টুইট করেছেন। সেখানেই তিনি লিখেছেন যে, ‘ভারত জোড়ো যাত্রার তৃতীয় দিনে এক আজব মুহূর্ত। মার্থান্ডামে মনরেগা মহিলা কর্মীদের সঙ্গে বিকেলে কথা বলছিলেন রাহুল। সেই সময় একজন বলেন, তিনি জানেন রাহুল তামিলনাড়ুকে ভালবাসেন। তাই তাঁরা তাঁর সঙ্গে এক তামিল মেয়ের বিয়ে দিতে চান। যা শুনে রাহুল কার্যত অভিভূত হয়ে পড়েন।’
কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত এই যাত্রা হবে। এই যাত্রায় রাহুল গান্ধীর অন্যতম সঙ্গী জয়রাম রমেশ। উল্লেখ্য কয়েকদিন আগেই রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন যে, এই যাত্রা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিই নয় শুধু। তাঁর কাছে এই যাত্রা ব্যক্তিগত। নিজেকে এবং এই সুন্দর দেশকে ভাল করে বুঝতে চাওয়াই এই যাত্রায় অংশগ্রহণের মূল কারণ। এদিকে, অনেকেই মনে করছেন যে, টানা ৫ মাস ধরে ৩৫০০ কিলোমিটারের বেশি এই পদযাত্রা আসলে রাহুল গান্ধীর ‘পার্ট টাইম’ ভাবমূর্তি মুছে ফেলা। আসলে তাঁকে ‘পার্ট টাইম’ রাজনীতিক বলে কটাক্ষ করে থাকেন বিজেপি নেতারা। এমনকি কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ এবং দল ছেড়ে দেওয়া নেতারাও একই অভিযোগ তোলেন তাঁর বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, এই ৩৫০০ কিলোমিটার রাস্তার সম্পূর্ণটা না হলেও বেশিরভাগটাই হাঁটবেন তিনি।
রাহুল গান্ধীর ঘোষণা অনুযায়ী, এই যাত্রার উদ্দেশ্য হল বিজেপি ও আরএসএসের বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ এবং ঐক্যের মতাদর্শকে তুলে ধরা। তবে, তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে এই যাত্রা শুরু হলেও, বেশিরভাগ বিজেপিশাসিত রাজ্যের মধ্যে দিয়ে এই যাত্রা যাবে না। যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের শাহের রাজ্য গুজরাতে এই যাত্রা যাবে না। আবার উত্তরপ্রদেশের যোগী রাজ্যে এই যাত্রা সামান্য ছুঁয়ে যাবে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে, কর্ণাটক হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র এই চার বিজেপি বা বিজেপি জোট শাসিত রাজ্যে রাহুল গান্ধীর এই ভারত জোড়ো যাত্রা পৌঁছাবে। তবে, এই যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, এই যাত্রার কারণে কি দেশব্যাপী নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি বিরোধী হাওয়া উঠবে? এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনবে, কংগ্রেসের জন্যও সঞ্জীবনী হয়ে উঠবে।’
উল্লেখ্য, তামিলনাড়ু থেকেই ওই কর্মসূচি শুরু করেছেন রাহুল। শনিবার ছিল সেই যাত্রার তৃতীয় দিন। ওই দিন মারথানডাম নামে একটি জায়গায় মনরেগা কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন রাহুল গান্ধী। বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আর সেই সময় বিয়ের প্রস্তাব পান কংগ্রেস সাংসদ।
অন্যদিকে, শনিবারই ছিল রাহুলের তামিলনাড়ু সফরের শেষ দিন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এশিয়ার প্রথম মহিলা বাস চালকের সঙ্গে দেখা করেছেন রাহুল। এছাড়াও কেরলের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন তিনি। আবার এক জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :