বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সময়টা ছিল ২০১৬ সালের, ৮ নভেম্বর। সেইদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটা ঘোষণা কোটি কোটি ভারতবাসীর জীবন বদলে দিয়েছিল। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেছিলেন, পরের দিন থেকেই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল বলে গণ্য হবে দেশের সর্বত্র। কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছিল। মানুষ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, কেন্দ্রের আচমকা এই সিদ্ধান্তের কারণে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি শোনা গিয়েছিল। আর কেন্দ্র সরকারের যুক্তি ছিল, এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশে কালো টাকার রমরমা আটকানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি সেই ঘটনার পর থেকে কালো টাকার কারবারিদের রুখতে কেন্দ্রের মোদী সরকার কতোটা সফল হয়েছে, সেই প্রশ্ন লাগাতার করে চলেছে বিরোধীরা। এবার কেন্দ্রের সেদিনের সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে উঠল মামলা।
কেন্দ্রের সেই বড় পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবারই রয়েছে মামলার শুনানি। সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে বলেই জানা গিয়েছে। এর জেরে ফের একবার চর্চায় উঠে এসেছে নোট বাতিলের প্রসঙ্গ। এই মামলায় মামলাকারীদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র সরকারের সেই সিদ্ধান্ত কি আদৌ সাংবিধানিকভাবে বৈধ ছিল? বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আবদুল নাজিরের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ এই বিষয়ে মামলাকারী এবং সরকারপক্ষের বক্তব্য শুনবে। তবে, মনে করা হচ্ছে, কাল সুপ্রিম কোর্টের তরফে একটি তারিখ ঘোষণা করা হবে, যেদিন এই মামলার বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি হবে।
সূত্রের খবর, আবদুল নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের, ৮ নভেম্বর মধ্যরাতে ৫০০ ও ১০০০-এর পুরনো নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দাবি করেছিলেন সেদিন যে, গোটা দেশে এই পদক্ষেপের কারণে ক্রমবর্ধমান আর্থিক দুর্নীতি, কালো টাকার বাড়বাড়ন্ত এবং জাল নোটের ব্যবসাতেও রাশ টানা যাবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার জেরে রাতারাতি দেশজুড়ে ওই নোট অকেজো হয়ে পড়ে। পরের দিন থেকেই ব্যাঙ্কগুলির বাইরে উদ্বিগ্ন মানুষের লম্বা লাইন জমতে শুরু করে। ৫০০-১০০০ এর নোট জমা দিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রথমদিকে, মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জানা যায়, কেন্দ্রের ওই পদক্ষেপের ফলে ৮৬ শতাংশ নোট বাতিল হয়ে গিয়েছিল। বাজারে এসেছিল ২ হাজার টাকার নোট। এটিএমের বাইরে দীর্ঘলাইন সেই সময় এক অতি স্বাভাবিক দৃশ্য হয়ে ওঠে। সব মিলিয়ে আকস্মিক ওই পদক্ষেপে জেরে দেশের মানুষকে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।
দেশের নানা প্রান্তে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হতেও দেখা গিয়েছিল। বিরোধীরাও সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এখনও মাঝামাঝি বিরোধীরা কেন্দ্রের সেদিনের সিদ্ধান্ত নিয়ে খোঁচা দিয়ে থাকেন। এখন এতাই দেখার যে, নোট বাতিলের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেয়।
আপনার মতামত লিখুন :