শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি কেন? গুজরাত সরকারকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২২, ০৪:৪৬ পিএম | আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২২, ১০:৪৬ পিএম

বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি কেন? গুজরাত সরকারকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি কেন? গুজরাত সরকারকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনেই বিলকিস বানো-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেয় গুজরাত সরকার। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। বিস্তর সমালোচনা হয়। বিলকিস বানো-কাণ্ডে গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। সেই সংক্রান্ত মামলায় এবার গুজরাত সরকারকে নোটিস পাঠাল দেশের শীর্ষ আদালত। বিলকিস বানোর ১১ জন ধর্ষকের মুক্তি নিয়ে গুজরাত সরকারকে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় ১১ জন দোষীকে যুক্ত করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২ সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ অগস্ট, মঙ্গলবার বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য সুভাষিণী আলি, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শীর্ষ আদালতে মামলাটি উত্থাপন করেন আইনজীবী অপর্ণা ভট্ট।

তার আগেই, এ বছর ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনেই বিলকিস বানো-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেয় গুজরাত সরকার। মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল ১১ জন অপরাধীর মধ্যে এক অপরাধী। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। এর পরই ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি দেওয়াই শুধু নয়, অপরাধীদের ফুল, মালা, মিষ্টিতে বরণ করে নেওয়া হয়। এদিকে, এর পাশাপাশি তাদের ব্রাহ্মণ পরিচয়ের উল্লেখ করে সংস্কারী আখ্যাও দিয়েছেন বিজেপির এক বিধায়ক। এরপরই গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরই আক্ষেপের সুরে বিলকিস বলেছেন, ‘১৫ অগস্ট বিগত ২০ বছরের আতঙ্ক আবার আমাকে গ্রাস করল, যখন আমি শুনলাম আমার জীবন, আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া ১১টা লোক মুক্তি পেয়ে গেল, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। এখনও বোবা হয়ে আছি।’ গুজরাতের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিলকিসের দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক সুপ্রিম কোর্ট- এই আবেদন জানিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সই সংগ্রহও করেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে ভয়াবহ হামলা হয়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের কন্যাসন্তানকে পাথরে আছড়ে মারে হত্যা করে হামলাকারীরা। এর জেরে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। এখানেই শেষ নয়, তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই ঘৃণ্য অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই- এর বিশেষ আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই মামলায় ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। এর মধ্যে মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়।