শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

মৃত ছেলের দেহ ছাড়াতে লাগবে ৫০ হাজার টাকা! ভিক্ষা করছেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২২, ১০:০৩ এএম | আপডেট: জুন ৯, ২০২২, ০৪:০৩ পিএম

মৃত ছেলের দেহ ছাড়াতে লাগবে ৫০ হাজার টাকা! ভিক্ষা করছেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা
মৃত ছেলের দেহ ছাড়াতে লাগবে ৫০ হাজার টাকা! ভিক্ষা করছেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ নিজের ছেলের দেহ ফিরে পেতে গেলেও দিতে হবে টাকা। তাও সামান্য কটা টাকা নয়, বেশ কয়েক হাজার টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই মাথায় আকাশ ভেঙে পরে বৃদ্ধ বাবা-মার। একেই সন্তান হারানোর শোক, তার উপর সেই সন্তানকে শেষ দেখা দেখার জন্য এতো টাকার বোঝা। কিছুতেই কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না বৃদ্ধ দম্পতি। অবশেষে নিরুপায় হয়েই ভিক্ষার রাস্তা অবলম্বন করেন তাঁরা। 

ঘটনাটি বিহারের সমস্তিপুরের। বেশ কিছুদিন ধরেই নিখোঁজ ছিল ছেলে। ছেলের কোনও খোঁজই পাচ্ছিলেন না। আচমকাই হাসপাতাল থেকে ফোন আসে যে, তাঁদের ছেলে আর বেঁচে নেই। শুধু তাই- নয়, ওই হাসপাতাল থেকে এও জানানো হয় যে, ছেলের দেহ ফেরত পেতে গেলে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। 

এমনিতেই সংসারের বেহাল অবস্থা, নুন আনতে পান্তা ফোরায়। যে ছেলে সংসারের হাল ফেরাবে বলে ভেবেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি, সেই ছেলেও অকালে চলে গেল। তার উপর নিজের ছেলের দেহের উপরেও অধিকার নেই তাঁর বাবা-মা’র। দেহ ফিরে পেতে গেলেও দিতে হবে মোটা টাকা ঘুষ। তাই অন্য পথ খুঁজে না পেয়ে, কার্যত বাধ্য হয়েই ভিক্ষা শুরু করেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মানুষের কাছে হাত পাততে দেখা গিয়েছে তাঁদের। ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। 

ওই বৃদ্ধ দম্পতি জানিয়েছেন যে, ‘আমাদের ছেলে বেশ কিছুদিন ধরেই নিখোঁজ ছিল। সমস্তিপুর সদর হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলল, ওর দেহ নিতে হলে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। আমরা গরিব মানুষ। কী করে এত টাকা দেব?’ এদিকে, জানা গিয়েছে, বিহারের নীতীশ কুমার এবং বিজেপির জোট সরকার পরিচালিত ওই সরকারি হাসপাতালের বেশিরভাগ কর্মী সামান্য বেতনে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করেন। তাই অতিরিক্ত রোজগারের জন্য এভাবেই রোগীর আত্মীয়দের থেকে টাকা আদায় করে্ন তাঁরা। এ ধরনের ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে বলেও জানা গিয়েছে। 

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সমস্তিপুর জেলা প্রশাসন বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে। ওই বৃদ্ধ দম্পতির হাতে তাঁদের মৃত ছেলের দেহ তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের যে কর্মী তাঁদের কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে তারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।