বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

‘অগ্নিবীর’দের জন্য চাকরির সুযোগ! বড় সুখবর দিলেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২, ১২:২৫ পিএম | আপডেট: জুন ২০, ২০২২, ০৬:২৫ পিএম

‘অগ্নিবীর’দের জন্য চাকরির সুযোগ! বড় সুখবর দিলেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা
‘অগ্নিবীর’দের জন্য চাকরির সুযোগ! বড় সুখবর দিলেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘অগ্নিপথ’-এর আঁচে জ্বলছে গোটা দেশ। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কেন্দ্রের এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ দেশজুড়ে। বাংলাও এই বিক্ষোভের আঁচ থেকে বাদ যায়নি। বিহারের পরিস্থিতি বেশি খারাপ এই বিক্ষোভের জেরে। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে গোটা দেশে। ব্যাপক নষ্ট হয়েছে সরকারি সম্পত্তি। অগ্নিপথের প্রতিবাদের জেরে জ্বলছে দেশ। বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্টেশনে স্টেশনে ভাঙচুর করাও হয়েছে। সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে রেল পরিষেবাতে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ হয়েই চলেছে। 

মোদী সরকারের এই প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে বিক্ষোভ। তা কী এই প্রকল্প? ভারতীয় সেনাবাহিনীতে স্বল্প মেয়াদে চুক্তির ভিত্তিতে সেনা নিয়োগ করা হবে। এই প্রকল্পের অধীনে চলতি বছরে কেন্দ্রের মোদী সরকার ভারতীয় সেনা বাহিনীতে তরুণদের নিয়োগ করবে। যাঁদের নাম দেওয়া হবে ‘অগ্নিবীর’। কিন্তু সেনায় চুক্তির ভিত্তিতে কাজ পেতে রাজি নয় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, এই প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করুন কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে এবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। কেন্দ্রের মোদী সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করেই এই বনধ বলে জানা গিয়েছে। 

এদিকে, এই পরিস্থিতিতে বড় সুখবর দিলেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা। বছর ৬৭-র শিল্পপতি জানিয়েছেন, যোগ্য ও প্রশিক্ষিত অগ্নিবীরদের কর্মসংস্থান দেবে মাহিন্দ্রা গ্রুপ। আর এই ঘোষণায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘোষণার পাশাপাশি দেশজুড়ে চলা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এবং হিংসাত্মক ঘটনা প্রসঙ্গেও শোকপ্রকাশ করেছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা। এখানেই শেষ নয়, এই শিল্পপতি অগ্নিবীরদের প্রাপ্ত প্রশিক্ষণকে ‘বিশেষ’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

সোমবার সকালে তিনি টুইট করে জানান, ‘অগ্নিপথ প্রোগ্রাম নিয়ে আশেপাশের হওয়া ঘটনায় দুঃখিত। গত বছর যখন স্কিমটি নিয়ে কথা উঠেছিল, তখন বলেছিলাম ও আবারও বলছি, অগ্নিবীরদের শৃঙ্খলা এবং দক্ষতা তাঁদের বিশিষ্টভাবে নিয়োগযোগ্য করে তুলবে। মাহিন্দ্রা গ্রুপ এই ধরনের বিশেষ প্রশিক্ষিত, যোগ্য তরুণদের নিয়োগের এই সুযোগকে স্বাগত জানাচ্ছে।’

এদিকে, আনন্দ মাহিন্দ্রার এই পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অসংখ্য মানুষ। এক নেটিজেন প্রশ্ন করেছেন, অগ্নিবীরদের কী পদ দেওয়া হবে? এর জবাবে আনন্দ মাহিন্দ্রা জানিয়েছেন, কর্পোরেট সেক্টরে অগ্নিবীরদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থান রয়েছে। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে অনেকেই এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। এই প্রকল্প অনুযায়ী, ‘অগ্নিবীর’দের মাত্র ৪ বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে। পরবর্তীকালে ইচ্ছুকদের স্থায়ীকরণ করা হবে। তবে, তা মাত্র ২৫ শতাংশ। ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই অস্থায়ী চাকরির মাধ্যমে ‘নিয়মিত ক্যাডার সেবায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনের সুযোগ’ থাকছে। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়ারা। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন এবং ৪ বছরের মেয়াদ শেষে এককালীন ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। যা হবে সম্পূর্ণ করমুক্ত। 

সূত্রের খবর, ৪ বছর পর এই প্রকল্পে যোগ দেওয়া জওয়ানরা স্কিল গেইন সার্টিফিকেট, ক্রেডিট ফর হায়ার এডুকেশন সার্টিফিকেট। তবে, অবসরের পরে ওই অগ্নিবীররা পাবেন না কোনও অবসরকালীন সুযোগ- সুবিধা। এমনকি অন্য চাকরির ক্ষেত্রে ‘প্রাক্তন সেনাকর্মী’ বলেও উল্লেখ করা যাবে না। এর পাশাপাশি তাঁরা পাবেন না পেনশন, গ্র্যাচুইটির সুবিধা। যদিও পরে এই বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়। এক্ষেত্রে বিরোধীদের পক্ষ থেকে অগ্নিবীরদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিরোধীদের দাবি ছিল এই প্রকল্পের কারণে দেশে বেকারত্বের সংখ্যা আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু যুবকের কর্মজীবন অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে, সরকার পক্ষ সেই দাবি মানতে নারাজ। 

অন্যদিকে, দেশজুড়ে চলা এই অগ্নিপথ বিতর্কে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ‘দেশের নাগরিকদের মঙ্গলের জন্যই সরকারের তরফে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু, সেখানেও রাজনীতির রং লাগিয়ে আসল উদ্দেশ্য পূরণ হতে দেওয়া হয় না।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ‘দেশের জন্য অনেক ভালো প্রকল্প ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়। কিন্তু, আমাদের দেশের দুর্ভাগ্য যে তাতে রাজনীতির রং লেগে যায়।’