শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

দেশে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই কোভিশিল্ড তৈরি বন্ধ করল সেরাম!

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২২, ০৮:০০ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ২৩, ২০২২, ০২:০৮ এএম

দেশে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই কোভিশিল্ড তৈরি বন্ধ করল সেরাম!
দেশে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই কোভিশিল্ড তৈরি বন্ধ করল সেরাম! / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ দেশে করোনার সংক্রমণ। দেশের মধ্যে ৫ রাজ্যে ইতিমধ্যেই করোনার উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সতর্ক করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিশ্বের বেশ কিছু দেশেও করোনার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা মহামারী। নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে করোনার একাধিক নয়া প্রজাতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। করোনার আরও এক নয়া প্রজাতি XE ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলার খবরের মাঝেই ফের দেশে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের করোনা গ্রাফে ওঠানামা অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

এদিকে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকেই সেরাম ইন্সটিটিউট করোনার টিকা কোভিশিল্ড-এর উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে একথাই জানালেন সংস্থার কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা। তাঁর বক্তব্য, টিকা যাতে কোনোভাবেই নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। উক্ত অনুষ্ঠানেই টিকা সংক্রান্ত বেশ কিছু সমালোচনার উত্তর দেন আদর পুনাওয়ালা। তিনি বলেন, ‘করোনার টিকাকরণ নিয়ে বাণিজ্যিক মানসিকতা থাকলে চলবে না। এটা ঠিক যে, অতিমারি আর আমাদের পিছনে তাড়া করছে না। কিন্তু তা বলে একজন নাগরিকের জীবনের জন্য কোনও দাম ধার্য করা যায় না।’

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই টিকাকরণের মাঝের দূরত্ব কমানোর পক্ষে সওয়াল করতে শুরু করেছেন আদর পুনাওয়ালা। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৯ মাস পর বুস্টার ডোজ নিতে হয়। কিন্তু সেরাম কর্তা এই সময় কমিয়ে ৬ মাস করতে চাইছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেরই অভিযোগ, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক লাভের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আদর পুনাওয়ালা।

এদিন তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি উল্টে এটা স্পষ্ট করতে চেয়েছেন যে, শুধুমাত্র আর্থিক লাভের আশায় তাঁর সংস্থা করোনা টিকা তৈরি করেনি। প্রথম এবং বিশেষত করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় ভারতবাসী যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছে, সেই পরিস্থিতি যাতে আর ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করতেই দ্বিতীয় ডোজের সঙ্গে বুস্টার ডোজের ব্যবধান কমানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন সেরামের কর্ণধার। যদিও কোভিশিল্ড তৈরি এবং বিক্রি করে আদর পুনাওয়ালা যে অনেক টাকা রোজগার করেছেন, এ নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। 

সেরাম কর্তার আরও বক্তব্য, ‘অপচয়ের পথ পুরোপুরি বন্ধ করতে আমি বিনামূল্যেও টিকা দেওয়ার কথা বলেছি। আমার লক্ষ্য যদি শুধুই টাকা রোজগার করা হত, তাহলে কখনই এমনটা করতাম না। আমি বলতে চাই, দেশের কোনও নাগরিকের জীবনের মূল্য টাকা দিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তা তিনি কোনও প্রাপ্তবয়স্ক হন, কিংবা কোনও নাবালক। তাই এই বিষয়ে আমাদের সময় থাকতেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে হোক, কিংবা নাবালকদের টিকাকরণ, আমাদের সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ তিনি অভিযোগের সুরে বলেন যে, নাগরিকদের জীবন বাঁচাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পদক্ষেপ করা দরকার। কিন্তু যাঁদের উপর এই দায়িত্ব, তাঁরা বিনা কারণে সময় নষ্ট করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন সেরাম কর্তা আদর পুনাওয়ালা।