শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

‘সিপিএমের সন্ত্রাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি, বেকারত্বে ত্রিপুরা এক নম্বরে’! বিজেপিকে আক্রমণ অভিষেকের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২, ০১:৩২ পিএম | আপডেট: জুন ২০, ২০২২, ০৭:৩৫ পিএম

‘সিপিএমের সন্ত্রাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি, বেকারত্বে ত্রিপুরা এক নম্বরে’! বিজেপিকে আক্রমণ অভিষেকের
‘সিপিএমের সন্ত্রাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি, বেকারত্বে ত্রিপুরা এক নম্বরে’! বিজেপিকে আক্রমণ অভিষেকের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ চলতি মাসের ২৩ জুন ৪ কেন্দ্রের ত্রিপুরায় উপনির্বাচন রয়েছে। এই উপনির্বাচনই এখন তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ। নির্বাচনের আগে সোমবার নির্বাচনী প্রচারে আগরতলায় গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উপনির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে। 

ত্রিপুরায় ভোট প্রচারে গিয়ে দলীয় প্রার্থী এবং কর্মীদের উৎসাহিত করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ করেন। এদিন আগরতলায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে অভিষেক ত্রিপুরার মানুষের কাছে বর্তমান বিজেপিশাসিত সরকারের বেহাল দশা তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিজেপি সরকারের ‘জনবিরোধী’ কার্যকলাপ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করেন। তিনি জনতার উদ্দেশে অনুরোধ জানিয়েছেন যে, বিজেপি বিরোধী ভোট কংগ্রেস বা সিপিএমকে নয়, তৃণমূলে যেন আসে। রাজ্যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তৃণমূলই এগিয়ে। তাই তৃণমূলের প্রার্থীদের জিতিয়ে যেন তৃণমূল কংগ্রেসের হাত আরও শক্ত করা হয়। ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের হাত শক্তিশালী করার জন্য অভিষেক এদিন করজোড়ে ত্রিপুরাবাসীর কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি, নিজের ভোট নিজে দিন। নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। বিজেপি বিরোধী ভোট নষ্ট করবেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের হাত শক্ত করুন।’

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, ‘সিপিএমের সন্ত্রাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ত্রিপুরার উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। বর্তমানে সংবাদমাধ্যমও বিজেপির আক্রমণের মুখে। বেকারত্বে ত্রিপুরা এক নম্বরে। ত্রিপুরার বেকারত্বের হার ১৮ শতাংশ। বাংলায় বেকারত্বের হার ৪ শতংশ। ১৪৫কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল ত্রিপুরার স্মার্ট সিটির জন্য। কোথায় সেই স্মার্ট সিটি? এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলে গলা জল। এমনকী NCRB রেকর্ডে রাজনৈতিক সন্ত্রাস সবথেকে বেশি ত্রিপুরায়। বিজেপির রাজত্বে ভুয়ো প্রতিশ্রুতির পাহাড়।’

তিনি দাবি করেছেন যে, তৃণমূল কর্মীদের নামে ভুয়ো মামলা করেছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘সেটিং করে আর চলবে না, তৃণমূল পায়ে পা দিয়ে লড়াই করবে। পরিস্থিতি বদলাতে বিজেপিকে উৎখাত করতে হবে। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত তৃণমূল মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে। লড়াইটা তৃণমূল বনাম বিজেপি নয়, লড়াইটা ত্রিপুরার জনগণ বনাম বিজেপির। ভোটবাক্সে সেই প্রতিফলন দেখান। আজকের তৃণমূল চোখরাঙানিকে ভয় পায় না। মানুষের জন্য লড়াই করতে বদ্ধপরিকর।’

এদিন অভিষেক বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, ‘ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিন সরকার ডাহা ফেল, বাংলায় সিঙ্গল ইঞ্জিন সরকার দিব্য়ি চলছে। তৃণমূল প্রথম দিন থেকে জনতার পাশে ছিল, পাশেই থাকবে।’ তাঁর কথায়, ‘ত্রিপুরার মানুষ কংগ্রেস, সিপিএম-কে দেখেছে। এখন বিজেপি-কেও দেখছে। কিন্তু, তৃণমূলকে দেখেনি। তাই আমরা বারবার বলছি তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র বিজেপির-র সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই চালাচ্ছে।’ অভিষেক দাবি করেছেন যে, বিজেপির সন্ত্রাস বিগত বেশ কয়েক বছরের এবং সিপিএমের সন্ত্রাসকেও হার মানিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন যে, ‘ত্রিপুরার শাসকদলের শক্তি বাড়াচ্ছে গুন্ডারা, আর জনতা রয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে। দেশে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক হিংসা চলছে ত্রিপুরায়।’ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় রাজনৈতিক পরিবর্তন না হলে মানুষেরই বিপদ, তাই বিজেপিকে উৎখাত করতেই হবে। তাঁর মতে, ‘তৃণমূল মেরুদণ্ড বিক্রি করে না কখনও’। 

এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন যে, ত্রিপুরা এবার প্রকৃত পরিবর্তনের দোরগোড়ায় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিজেপি বলেছিল মিসড কলে চাকরি হবে, হয়নি। বহু শিক্ষকের চাকরি ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে। রাস্তার এমন অবস্থা, অন্তঃসত্ত্বাদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলে আগরতলায় ডুবজল, বিজেপির কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। এই পরিবেশ থাকলে, ত্রিপুরায় কোনওদিন বিনিয়োগ, শিল্প আসবে না।’ পাশাপাশি বিজেপিকে হারালে পেট্রল, ডিজেলের দাম কমবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করতেও দেখা যায়।