শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বিহারের ভাগলপুরে রাতে আচমকাই ভয়াবহ বিস্ফোরণ! মৃত ৯, আহত একাধিক

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২২, ১০:৩৭ এএম | আপডেট: মার্চ ৪, ২০২২, ০৪:৪৫ পিএম

বিহারের ভাগলপুরে রাতে আচমকাই ভয়াবহ বিস্ফোরণ! মৃত ৯, আহত একাধিক
বিহারের ভাগলপুরে রাতে আচমকাই ভয়াবহ বিস্ফোরণ! মৃত ৯, আহত একাধিক

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই পরপর বিস্ফোরণ! ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বিহারের ভাগলপুর। গোটা শহরজুড়েই বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এতোটাই ভয়াবহ ছিল। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবরে, এই বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত একাধিক। এর মধ্যে ১২ জন গুরুতর আহত। 

জানা গিয়েছে, এই বিস্ফোরণ এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে, তিনটি বাড়ি সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাগলপুর রেঞ্জের ডিআইজি সুজিত কুমার এই বিস্ফোরণের প্রাথমিক কারণ হিসেবে বারুদ, বাজি ও দেশি বোমা তৈরির কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ফরেনসিক দলের তদন্তের পরই এই ঘটনার সব দিক সামনে আসবে। 

জানা গিয়েছে, কোতোয়ালি থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই ঘটনা ঘটে। থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের এই ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে একটি তিনতলা বাড়ি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাশের আরও দু-একটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোটাই বেশি ছিল যে, কয়েকটি বাড়ির দেওয়ালেও ফাটল ধরে।

বিস্ফোরণের খবর সামনে আসতেই, ঘটনাস্থলে যান ডিআইজি সুজিত কুমার, ডিএম সুব্রত কুমার সেন, এসএসপি বাবু রাম। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল সংখ্যায় পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থল সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ফেলা হয়। পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। ঘটনাস্থল ঘিরে দুটি জেসিবিকে কাজে লাগিয়ে ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার ও সেখানে আটকদের দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা শুরু হয়। ইতিমধ্যেই অনেকেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অনেক মানুষের চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই বিস্ফোরণের প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা কেঁপে ওঠে এবং ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এদিকে, ভাগলপুরের ডিএম সুব্রত কুমার সেন জানিয়েছেন, মূলত যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেখানে আতশবাজি তৈরি করা হত। বিস্ফোরণের আসল কারণ কী তা অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। পাশাপাশি, প্রতিবেশীরা এবং আরও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আতশবাজি তৈরির আড়ালে ওই বাড়িতে বোমা তৈরি করা হতো।

এই ঘটনায় আহতদের ভাগলপুরের জেএলএন হাসপাতাল মায়াগঞ্জে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এলাকার এক প্রতিবেশী যুবকের মতে, বিধ্বস্ত বাড়ির মালিক বোমা বানানোর কারবার করত। মানুষ জানাচ্ছেন যে, বিক্রমশীলা কলোনি, রিকাবগঞ্জ, উর্দু বাজার, রামসর, জব্বারচক, ইশাকচক, লালুচক, আদমপুরের মতো এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি বিস্ফোরণের ধাক্কায় কেঁপে ওঠে। লোকজন আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে আসেন। 

এদিকে, ঘটনার পর ভাগলপুরের জেলা শাসকের নির্দেশে জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের দল গঠন করা হয়। জানা গেছে, পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।