শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভাড়াটে মহিলাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার বিনামূল্যে অক্সিজেন প্রদানকারী কোভিড যোদ্ধা

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২২, ০৫:১০ পিএম | আপডেট: মে ১১, ২০২২, ১১:১০ পিএম

ভাড়াটে মহিলাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার বিনামূল্যে অক্সিজেন প্রদানকারী কোভিড যোদ্ধা
ভাড়াটে মহিলাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার বিনামূল্যে অক্সিজেন প্রদানকারী কোভিড যোদ্ধা

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশজুড়ে লাগাতার করোনা সংক্রমনের জেরে একসময় অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল হাজার হাজার মানুষ। সেই সময় সাক্ষাৎ দেবতার মত বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন অসংখ্য কোভিড রোগীদের। এমনকি নিজের অটোকে অ্যাম্বুলেন্সে বদলে বহু রোগীকে সময়ের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই কোভিড যোদ্ধাই গ্রেফতার হলেন ধর্ষণের অভিযোগে।

জানা গিয়েছে, ভোপালের ওই অটোচালকের নাম জাভেদ। বয়স ৩৪ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন এক দম্পতি। অভিযোগ ওঠে, ২৭ বছর বয়সী ওই ভাড়াটে মহিলার উপর প্রায়শই শারীরিক অত্যাচার চালাতেন জাভেদ। কিন্তু গত ৩ মার্চ সমস্ত অন্যায়ের সীমা ছাড়িয়ে যায়। সেদিন স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাড়িতে একাই ছিলেন ভাড়াটে মহিলা। সেই সুযোগ নিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়েন জাভেদ। এরপর ওই মহিলাকে জাভেদ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ওইদিনের পর থেকে যখনই সুযোগ পেতেন জাভেদ ওই মহিলার ওপর শারীরিক নির্যাতন করতেন। গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলে এই অত্যাচার। এরপর তিনি সমস্ত ঘটনার কথা খুলে জানান স্বামীকে। তার কিছুদিনের মধ্যেই ওই দম্পতি জাভেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকা শুরু করেন।

এরপরেও থেমে থাকেননি জাভেদ। দিনের পর দিন ওই মহিলাকে শাসাতেও থাকেন তিনি। পুরো ঘটনার কথা বাইরে জানাজানি হলে আর কোনও নিস্তার থাকবে না। এমনকি মহিলাকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য রীতিমতো জোর করতে থাকেন জাভেদ। তবে এই ঘটনার পরে আর চুপ থাকেননি মহিলা। ১০ মে ভোপালের আয়েশবাগ থানায় জাভেদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (২এন) এবং ৫০৬ নং ধারায় মামলা রজু করা হয়। বুধবারই অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়েছে বলে জানা যায়।

গতবছর এপ্রিল-মে মাস নাগাদ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়েছিল গোটা দেশ। প্রতিটি হাসপাতাল ভরে গিয়েছিল কোভিড রোগীতে। এমনকি এক সময় রোগীর চাপে ব্যাপক অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। ভাইরাসের আক্রমণে নয় বরং অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যু হতে থাকে অসংখ্য মানুষের। সেই সময় বহু সাধারণ মানুষ কোভিড রোগীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ভোপালের অটোচালক জাভেদ।

বিনামূল্যে অক্সিজেনের যোগান দিতে প্রাণপাত করেছিলেন জাভেদ। এমনকি তাঁর অটোকে নিমেষে বদলে ফেলেছিলেন অ্যাম্বুলেন্সে। মরণাপন্ন করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। একের পর এক মহান কাজের জন্য একসময় সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল জাভেদের নাম। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ধর্ষণের অপরাধে সেই জাভেদই আজ কারাগারে বন্দি।