আগামী ২৪ জুলাই শেষ হচ্ছে বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ। তার আগেই আজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্যে বিজেপির তরফে পদপ্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল দ্রৌপদী মুর্মুকে। তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই বিরোধী দলগুলির তরফে ঘোষিত পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহার৷
যদি সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে এই দ্রৌপদী মুর্মুর হাতেই উঠবে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব। সেক্ষেত্রে তিনিই হবেন প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি। তবে আদৌ কি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতেই উঠতে চলেছে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব। সেই উওর মিলবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই। তবে দ্রৌপদী মুর্মুর শহর কিন্তু ইতিমধ্যেই বিজয় উৎসবের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন জন্মগ্রহণ করা দ্রৌপদী ওড়িশার রায়রংপুরের বাসিন্দা। আর সেখানের মানুষজনের স্থির বিশ্বাস, দ্রৌপদী হতে চলেছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। ইতিমধ্যেই যেন জয়ের বার্তা পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা৷ তাই রায়রংপুরে তৈরি হয়েছে ২০ হাজার মিষ্টি। জয়ের খবর পাওয়া মাত্রই মিষ্টিমুখে সামিল হবেন সেখানের স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুধু তাই নয়, দ্রোপদী মুর্মুর শহরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিজয় মিছিলেরও। হবে আদিবাসী নৃত্যও। বিজেপির পক্ষ থেকে রাজধানীতেও বিজিয় মিছিল করা হবে। সেও প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্রৌপদীর জয়ের খবর পাওয়া মাত্রই দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তর থেকে একটি রোড শো হতে পারে বলে খবর। অন্যদিকে, যাঁকে নিয়ে এত হইচই সেই দ্রৌপদী মুর্মু আপাতত তিন মূর্তি মার্গের অস্থায়ী বাসস্থানে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলেই তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখা করতে যাওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার অন্যতম দাবিদার দ্রৌপদীর কর্মজীবনের শুরু ওড়িশা সরকারের জলসম্পদ ও শক্তি দপ্তরে জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট হিসাবে। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এই কাজে ছিলেন তিনি। আবার ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারে সাম্মানিক শিক্ষিকা হিসেবেও কাজ করেন তিনি।
রাজনীতি ময়দানে প্রথম অভিষেক একজন কাউন্সিলর হিসেবে। পরবর্তীতে রায়রংপুর উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন হন দ্রৌপদী মূর্মু। শুধু তাই নয়, দু-দু`বার বিধায়কও হয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বিজু জনতা দল তথা নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রীসভায় মন্ত্রীও হিসেবেও উপস্থিতি ছিল তাঁর। বিজেপির হয়ে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার রায় রংপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০০০ এবং ২০০৪ সালে জয়লাভ করেন দ্রৌপদী। বিজেডি এবং বিজেপি জোট সরকার থাকাকালীন পরিবহণ, মৎস্য এবং পশুপালন দপ্তরের দায়িত্বও সামলান তিনি।
এসবের মাঝেই ২০০৭ সালে সেরা বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন দ্রৌপদী মুর্মু। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালও ছিলেন। রাজনীতিতে তাঁর এই প্রভূত সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই এবার রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁকে বেছে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। আর সব কিছু ঠিকঠাক চললেই ভারত পেতে চলেছে দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি।
আপনার মতামত লিখুন :